গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হিজলহাটি এলাকায় মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মুক্তিপণের জন্য আশিকুল রহমান (৩৫) নামের এক ডিম ব্যবসায়ীকে আটকে রাখে। ব্যবসায়ী আশিকুল মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।
মঙ্গলবার (৪ মে)রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ডিম ব্যবসায়ীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- দিনাজপুরের খানসামা থানার গারপাড়া এলাকার দুলাল রহমানের ছেলে আশিক (৩২), কালিয়াকৈর উপজেলার খোলাপাড়া এলাকার আতর আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন (২৩), জয়, আলগীর ও সুজন। তাদের তিনজনের ঠিকানা জানা যায়নি।
এ ঘটনায় ডিম ব্যবসায়ী আশিকুর রহমানের স্ত্রী তানজিলা আক্তার বাদী হয়ে বুধবার (৫ মে) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী পরিবার, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আশিক গত ছয় বছর আগে তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে জীবিকার খোঁজে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আসেন। পরে তিনি উপজেলার হিজলহাটি এলাকার জাহাঙ্গীরের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে ডিম ব্যবসা করে আসছেন। তার স্ত্রী তানজিলা বেগম স্থানীয় পলমল পোশাক কারখানায় কাজ করেন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ওই এলাকার রাজ্জাকের ছেলে জিহান, আব্দুল হামিদের ছেলে রাব্বি, তোফাজ্জলের ছেলে ফয়সাল, হাসেমের ছেলে শুভ, সৌরভসহ আরো ৫/৭ জন মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাং লাঠি, লোহার রড, স্টিলের পাইপ নিয়ে সেখানে যায়। এসময় ওই ডিম ব্যবসায়ী আশিক, জয়, আলগীর ও সুজনকে মারধর করে।
পরে ওই কিশোর গ্যাং ডিম ব্যবসায়ী আশিকের কাছ থেকে ১৩ হাজার ৭০০ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন লুট করে। এসময় তাকে আটক রেখে তার কাছে আড়াই লাখ টাকা দাবী করে কিশোর গ্যাং। তারা দাবীকৃত টাকা না পেয়ে তার নাকে, মুখে পানি ঢালে ও পলিথিন পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে।
ধস্তাধস্তির এক পর্যায় নিজের প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে তার ভাড়া বাসায় চলে যায়। কিন্তু কিশোর গ্যাং তার পিছু ধাওয়া করে ওই বাসার ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় ওই বাড়ির মালিকের প্রাইভেটকার চালক আলমগীর তাদের বাধা দিলে কিশোর গ্যাং তাকেও মারধর করে।
এসময় কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ে বাসায় ছাদের পাইপ বেয়ে নিচে নামা চেষ্টা করলে ৪র্থ তলার বেলকুনিতে আটকে পড়ে। তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে কিশোর গ্যাং ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে আটকে থাকা ডিম ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিস ও কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, এ ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় রাব্বি নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে শুনেছি, ওই এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের গ্রুপ আছে। এ ব্যাপারে পুলিশও তৎপর রয়েছে।