লে. কর্নেল সাজ্জাদ
Advertisements

আমাদের হাতে অস্ত্র দিয়ে যে আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করা হয়েছে আমরা তা যেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। এই অস্ত্র যেন আমাদেরকে মানব থেকে দানবে পরিণত না করে। ভবিষ্যতে মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মো. রাশেদ খানের মত অন্য যেকোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন মৃত্যুবরণ না করে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডারের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ।

শনিবার বিকাল ৫টায় কক্সবাজার হিলডাউন সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার তদন্ত কমিটির সদস্য।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ বলেন, আইনের রক্ষক হয়ে আমরা যেন ভক্ষকে পরিণত না হই। আমাদের হাতে অস্ত্র দিয়ে যে আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করা হয়েছে আমরা তা যেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। এই অস্ত্র যেন আমাদেরকে মানব থেকে দানবে পরিণত না করে। ভবিষ্যতে মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মো. রাশেদ খানের মত অন্য যেকোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন মৃত্যুবরণ না করে আমি সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

এসময় তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাজাহান আলি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, সিনহা হত্যার ঘটনায় তিন দফা সময় বাড়িয়ে ৩৫ দিনের মাথায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেছে। তদন্তে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে সম্মলিত এই প্রতিবেদনটি প্রায় ৮০ পৃষ্ঠা হয়েছে। রয়েছে ১২টি সুপারিশ। এই প্রতিবেদনের সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এই ধরণের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য করণীয় সম্পর্কে একটি সুপারিশমালাও প্রণয় করা হয়েছে। পাশাপাশি এই প্রতিবেদন আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সশরীরে তদন্ত কমিটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে জমা দিবেন বলেও তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় গত ২ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাজাহান আলিকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে সদস্য করা হয়েছিল কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি।

কিন্তু একদিন পর (৩ আগস্ট) পুনরায় উক্ত তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে পুনর্গঠন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এতে কমিটির প্রধান করা হয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে। আর সদস্য করা হয় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাজাহান আলি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডারের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদকে।

গত ৩ আগস্ট তদন্ত কমিটি আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেছিল। এসময় কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সরকার ৭ কর্মদিবস সময় নির্ধারণ করে দেয়া হলেও এনিয়ে তিন দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রথম দফায় ২৪ আগস্ট। পরে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু এর মধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে না পারায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিতে আরো ৭ দিনের সময় চায় এবং তা বাড়ানো হয় ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। একপর্যায়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত দল।

Advertisements