ইঅরেঞ্জ নিয়ে যা বললেন এমপি মাশরাফি
Advertisements

সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছেন তিনি ইকমার্স প্রতিষ্ঠান ইঅরেঞ্জের শুভেচ্ছা দূত ছিলেন, তবে তার মেয়াদ ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। তারপরেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর তিনি এর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের মামলায় সহায়তা করেছেন।

ইঅরেঞ্জ ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপিং শপ যার বিরুদ্ধে সম্প্রতি একদল গ্রাহক তাদের টাকা নিয়ে সময়মত পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করে এবং তাদের একটি দল মাশরাফি বিন মুর্তজা মিরপুরের বাসার সামনেও ধর্ণা দেয়।

মূলত, বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে অফিস বন্ধ করে কর্মকর্তাদের হোম অফিসের ঘোষণা দেয়ার পর সোমবার একদল গ্রাহক প্রতিষ্ঠানটির গুলশান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

তাদের অনেকে মাশরাফিকে প্রতিষ্ঠানটির সাথে কাজ করতে দেখার পর ই-অরেঞ্জে পণ্যের অর্ডার দিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন যা গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।

তবে মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ‘দোষারোপ করার আগে জানতে হবে আমি শেয়ার হোল্ডার কি না। আপনি যখন মালিকানায় না থাকবেন, তখন কীই বা করতে পারবেন। আমি চেষ্টা করেছি ওনাদের সহযোগিতা করার, তবে তাদের সাথে আমার চুক্তি এক দেড় মাস আগে শেষ হয়ে গেছে।’

‘আমার কাছে যখন অফার আসে তখন তাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না সেটা দেখি। তারা যদি অনুমোদিত না হয় সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে কিন্তু অনুমোদিত হলে তো প্রশ্ন ওঠেনা। আগে ২০-৩০টা কোম্পানির সাথে কাজ করেছি, কিন্তু সমস্যা হয়নি। এখন কোন এক কোম্পানির জন্য বিজ্ঞাপন করলাম, কিন্তু তাদের পানির ভেতর যদি পোকা পান। তাহলে এটার সমাধান কী?’

আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য ইঅরেঞ্জের গ্রাহকদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাকে ফোন দিয়েছিল, আমি বলেছি ঠিক আছে আমাদের কাছে আসেন। আমি যদি ১% ও মালিক হতাম সেক্ষেত্রে আমি দায় নিতে পারতাম, আমি যেহেতু শুভেচ্ছা দূত আমি এটা সমাধান করতে পারিনা। তাও যতটুকু সম্ভব ছিল করেছি। মামলার জন্য সাহায্য করেছি আমি, খুব সম্ভবত গুলশান থানায় একটি মামলাও হয়েছে’।

এদিকে ইঅরেঞ্জের গুলশান কার্যালয় এখন বন্ধ এবং এর কর্মকর্তাদেরও কোনো খোঁজ নেই কারণ তারা তাদের ফোন বন্ধ রেখেছেন। যদিও গত ১২ই অগাস্ট আরেকটি ফেসবুক পোস্টে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিলো যে তাদের অফিসে ভাঙচুর ও হামলার চেষ্টা করা হয়েছে এবং ডেলিভারি কার্যক্রম না শুরু হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যালয় বন্ধ থাকবে এবং কর্মকর্তারা বাসায় থেকেই কাজ করবেন।

সোমবার প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পাতায় আরেকটি নোটিশ দিয়ে বলা হয়েছে, ‘১৯ আগস্ট থেকে সকল পণ্য (মোটরসাইকেল বাদে, মোটরসাইকেলর টাকা রিফান্ড হবে ধারাবাহিক ভাবে) সরবরাহ শুরু হয়ে যাবে।’

ওই নোটিশে তারা জানিয়েছেন যে পহেলা জুলাই তারিখ থেকে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার সাথে তাদের চুক্তি শেষ হয়ে গেছে।

‘পহেলা জুলাই, ২০২১ হতে জনাব মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার সাথে চুক্তি শেষ হয়েছে। তাই আমাদের অফিসিয়াল কোন বিষয়ে তিনি কোনোভাবেই অবগত নয় এবং তিনি অফিসিয়াল ভাবে কোন কিছুই আপডেট দিতে পারবেন না। আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি তাদের কাছে যারা পণ্য অর্ডার করেছেন, কিন্তু এখনো পণ্য হাতে পাননি। আশা করি আমরা দ্রুত এই সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে বের করবো এবং আপনাদের পণ্য আপনাদের বুঝিয়ে দিতে পারবো । আর যেহেতু জনাব মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা আমাদের সাথে আর চুক্তিবদ্ধ নেই, সেহেতু সবার কাছে অনুরোধ রইল এই বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ না করার জন্য’।

এর আগে গত ত্রিশে জুলাই ফেসবুক পোস্টেই ইঅরেঞ্জ শপের সত্ত্বাধিকারী বিথী আক্তার জানিয়েছিলেন যে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা পরিবর্তন হচ্ছে, তবে তাতে গ্রাহকদের চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

‘বর্তমানে আমাদের অভ্যন্তরীণ অডিট চলছে। ব্যবসা ব্যবস্থাপনা সরকারি সকল নিয়ম নীতি মেনে পরিচালিত হবে। এতে আপনাদের বিচলিত বা শঙ্কিত হবার কারণ নেই। ই অরেঞ্জের অনলাইন ব্যবসা সঠিক নিয়মে চলবে’।

তবে এমন বেশ কয়েকটি নোটিশ প্রতিষ্ঠানটি তার ফেসবুক পেজে দিলেও গ্রাহকদের একটি অংশের মধ্যে উদ্বেগ কমেনি।

সূত্রঃ বিবিসি

Advertisements