প্রধানমন্ত্রীর
Advertisements

প্রধানমন্ত্রী বলেন,“সম্প্রতি আমরা চালু করেছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। যেটা লালমনিরহাটে আমরা স্থাপন করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিমান চলাচল, বিমান নির্মাণ, গবষেণা, মহাকাশ বিজ্ঞানচর্চা হবে। যার মাধ্যমে আমি আশা করি হয়ত একদিন আমরা এই বাংলাদেশে যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার তৈরিও করতে পারব, ইনশাল্লাহ। আর তাছাড়া মহাকাশ বিজ্ঞান র্চচা করে হয়ত একদিন আমরা মহাকাশেও পৌঁছে যেতে পারি, সেই প্রচেষ্টাও আমাদের থাকবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিমানবাহিনীকে উন্নত ও আধুনিকায়নে ভবিষ্যতে আরও আধুনিক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’ তিনি বলেন, ইতিমধ্যে তাঁর সরকার বিমানবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় আধুনিক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিমান, হেলিকপ্টার, রাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এবং মুখ্য যন্ত্রপাতি সংযোজন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যাধুনিক পাঁচটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান ক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে, যার তিনটি বিমান ইতিমধ্যে দেশে পৌঁছেছে। বৈমানিকদের উন্নততর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে আরও ৭টি অত্যাধুনিক কে-৮ ডব্লিউ জেট ট্রেইনার বিমান সংযোজন করা হয়েছে এবং অচিরেই যুক্ত হতে যাচ্ছে পিটি-৬ সিমুলেটর। তিনি বলেন, ‘এখন হয়তো কোভিড-১৯–এর কারণে আমরা বেশি অর্থ ব্যয় করতে পারছি না। তবে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে বিমানবাহিনীকে আরও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের উদ্যোগে লালমনিরহাটে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিমান চলাচল, বিমান নির্মাণ, গবেষণা, মহাকাশবিজ্ঞানচর্চা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি এর মাধ্যমে একদিন হয়তো বাংলাদেশে যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান এবং হেলিকপ্টারও তৈরি করতে সক্ষম হবে, ইনশা আল্লাহ।’ তা ছাড়া মহাকাশবিজ্ঞানচর্চার মাধ্যমে একদিন মহাকাশে যাওয়াও সম্ভব হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনীর মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট উপভোগ করেন। এ সময় তাঁকে মনোজ্ঞ কুচকওয়াজের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়।

এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ৭৭তম বাফা কোর্স এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি-২০২০ কোর্স সম্পন্নকারীদের মধ্যে ফ্লাইং ব্যাজ, ট্রফি এবং অন্যান্য পুরস্কার বিতরণ করেন।
স্কোয়াড্রন জুনিয়র অফিসার শাকিল আহমেদ শ্রেষ্ঠ চৌকস ক্যাডেট হিসেবে অনুষ্ঠানে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।

‘মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বহু আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন,’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পাসিং আউট ক্যাডেটদের উদ্দেশে বলেন, ‘এ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা, দেশের মানুষের কল্যাণ করা এবং সার্বিক উন্নতি করাটাই আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কাজেই আমাদের বিমানবাহিনীর প্রতিটি সদস্য এবং বিশেষ করে নবীন ক্যাডেট যারা, তাদের সবাইকে আমি বলব—আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জনকারী একটি দেশ ও জাতি। সে কথা মনে রেখেই বুকে সাহস নিয়ে মাথা উঁচু করে বিশ্বের দরবারে চলতে হবে। আর নিজেদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে।’

করোনা মহামারিসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন দুর্যোগে বিমানবাহিনীর সদস্যদের কার্যকর ভূমিকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ ও জাতির প্রতি আপনাদের দায়বদ্ধতা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।’

হিমছড়িতে আটকে পড়া চার শিক্ষার্থীকে সফলভাবে উদ্ধার করায় বিমানবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্গম সেই এলাকায় হেলিকপ্টার নামানো সম্ভব না হলেও বিমানবাহিনী সেই ছাত্রদের উদ্ধার করে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ এবং ফ্লাইপাস্টের জন্য প্রধানমন্ত্রী সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে কুচকাওয়াজে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির প্রশংসা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজে মহিলা ক্যাডেটদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে আমি সত্যিই আনন্দিত ও গর্বিত। কিছুদিন আগেই মহিলা বিমানসেনাদের প্রথম দলটি তাদের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেছে। বর্তমান সরকারের এই পদক্ষেপ নারীর অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।’

Advertisements