পৃথিবী ও মানবজাতির সুরক্ষার জন্য জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে হবে । প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কেবল অন্য প্রজাতি বিলুপ্তির কারণ হচ্ছি না, বর্তমান কর্মকাণ্ড পরিবর্তন না হলে প্রকৃতপক্ষে মানবজাতিই চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘আর্জেন্ট অ্যাকশন অন বায়োডাইভারসিটি ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক বায়োডাইভারসিটি সামিটে দেওয়া ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘পৃথিবী ও আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। ’
চারটি প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের সময় টেকসই ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ, শিক্ষা পদ্ধতি; গবেষণা; ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি; জাতীয় আইন ও মনিটরিং শক্তিশালী করার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা, জেনেটিক রিসোর্স ও প্রথাগত জ্ঞান থেকে প্রাপ্ত সুফলে বৈশ্বিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা ও মানবজাতির বিলুপ্তি ঠেকিয়ে টিকে থাকার জন্য প্যারিসের লক্ষ্যগুলো অর্জন এবং প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
জীববৈচিত্র্য রক্ষার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেবল অন্য প্রজাতি বিলুপ্তির কারণ হচ্ছি না, বর্তমান কর্মকাণ্ড পরিবর্তন না হলে প্রকৃতপক্ষে মানবজাতিই চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে। আমরা একটি পরস্পরনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করি। এখানে প্রতিটি প্রজাতির প্রাণী বাস্তুতন্ত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে। অথচ ডব্লিউডব্লিউএফ (বিশ্ব বন্যজীবন তহবিল বা ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড) এবং লন্ডনের জুওলোজিক্যাল সোসাইটির হিসেব মতে ১৯৭০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের বন্যপ্রাণীর সংখ্যা গড়ে ৬৮ শতাংশ কমেছে। ’
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জৈববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কনভেনশনটি বাস্তবায়নের জন্য আইন প্রণয়নকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমরা সংসদে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি অ্যাক্ট ২০১৭ পাস করেছি। ’
বাংলাদেশ মোট স্থল অঞ্চলে পাঁচ শতাংশেরও বেশি ও সমুদ্র অঞ্চলের প্রায় পাঁচ শতাংশ অঞ্চল সুরক্ষিত এবং পরিবেশগতভাবে বাস্তুসংস্থান অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে মিঠা পানির ওপর নির্ভরশীল এবং বিশ্বে মিষ্টি পানির জীববৈচিত্র্য দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭০ সাল থেকে মিঠা পানির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভচর প্রাণী, সরীসৃপ এবং মাছের জনসংখ্যা প্রতি বছর গড়ে চার শতাংশ হারে কমেছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়কে বাড়িয়ে তুলছি, যার ফলে কোভিড-১৯ এর মতো ‘‘জুনটিক” রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। ’