মাদকাসক্ত ছেলের পিটুনিতে বাবার মৃত্যু
Advertisements

গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ এলাকায় মাদকাসক্ত দুই ছেলের পিটুনিতে আহত বাবা ওসমান গনি গতকাল সোমবার রাতে মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নিহত ওসমান গনির ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০) ও মাহবুব আলম (৩৬)।

নিহত ওসমান গনি গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ হাবিব মার্কেট এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, লাঠির আঘাতে ওসমান গনির শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়া তার চোখে রক্ত জমাট বেধেছিল এবং চোখের পাশের হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিল।

এলাকাবাসী, নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, ওসমান গনির ছোট ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০) কিছু দিন ধরে মাদক সেবন করছিলেন। মাদক সেবনের টাকা না পেলে তার সঙ্গে বড় ভাই শফিকুল ও তার বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের প্রায়ই ঝগড়া হতো। টাকা না পেয়ে তিনি তার বাবা ওসমান গনির ঘর থেকে ফ্রিজ, আইপিএস, টিভিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বিক্রি করে দেন। গত শনিবার (১৮ জুন) আবারো শরিফুল তার বাবার কাছে কিছু টাকা দাবি করেন। কিন্তু ওসমান গনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। পরে ওইদিন রাত পৌনে ১১ টার দিকে সারদাগঞ্জ রাইসমিলের পাশে হাবিব মার্কেটের সামনে শরিফুল তার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময়ে ওসমান গনি তার ছেলে শরিফুলের কাছে জানতে চায় কেন ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছে। এনিয়ে বাবা ও ছেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এসময় মাদকাসক্ত ছেলে শরিফুল ও অপর ভাই মাহবুব আলম ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি নিয়ে ওসমান গনিকে পেটাতে শুরু করেন। এক পযায়ে তারা লাঠি দিয়ে ওসমান গনির মাথায় আঘাত করতে গেলে আঘাতটি ওসমান গনির বাম চোখের ওপরে লাগে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওসমান গনিকে উদ্ধার করে গাজীপুর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করে। হাসপাতাল থেকে গতকাল সোমবার রাতে ওসমান গনিকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে আনার পর রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সকালে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে কাশিমপুর থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহতের আরেক ছেলে শফিকুল ইসলাম জানান, ছোট ভাই শরিফুল স্থানীয় মাদক সেবীদের সঙ্গে মিশে মাদকাসক্ত হয়ে যায়। এখন টাকা পয়সার জন্য চুরি করে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই সে বাড়ির লোকজনদের মারধোর করতো।

কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ রাফিউল করিম জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এঘটনার তার ছেলে শফিকুল একটি মামলা করেছেন। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি নিহতের দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisements