বুচায় নিরীহ মানুষ হত্যাকাণ্ড ও পশ্চিমা মিডিয়ার অপপ্রচার
Advertisements

কিয়েভের আশেপাশের এলাকা থেকে রাশিয়ান সৈন্য প্রত্যাহারের পর, পশ্চিমা মিডিয়াগুলো কিয়েভের পার্শ্ববর্তী বুচা শহরের ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছে, রুশ সেনারা ইউক্রেনের রাজধানী ছেড়ে যাওয়ার সময় বেসামরিক লোকজনের ওপর গুলি চালিয়েছে।

বুচা শহরের রাস্তার যেসব ছবি প্রকাশ করেছে পশ্চিমা মিডিয়া, সেসব ছবিতে দেখানো হয়েছে শহরের রাস্তা ও ফুটপাতে বেসামরিক লোকদের মৃতদেহ পড়ে আছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো দাবি করছে বুচা শহরের বাসিন্দারা বলেছেন এই বেসামরিক লোকজনকে রুশ বাহিনী কোনো কারণ ছাড়াই হত্যা করেছে। মস্কো এই খবরের প্রতিক্রিয়া দ্রুতই জানিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বুচায় বেসামরিক লোকজন হতাহতের ঘটনায়, যে ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, রাশিয়ার হাত থাকার ইউক্রেনিয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাশিয়া এই ঘটনাকে আরেকটি উস্কানিমূলক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে: এই শহরটি যতদিন রাশিয়ার সেনাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল ততদিন একজন অধিবাসীও কোনোরকম সহিংসতার মুখোমুখি হয় নি। বরং ওই শহরের লোকজন স্বাধীনভাবে আশপাশের শহরে ঘুরে বেড়িয়েছে এমনকি তারা তাদের মোবাইল ফোনও ব্যবহার করেছে নিশ্চিন্তে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে: তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার একদিন পর ৩০ মার্চে সকল রুশ সেনা-ইউনিট বুচা শহর থেকে বেরিয়ে গেছে। উপরন্তু ৩১মার্চ বুচা শহরের মেয়র আনাতোলি ফেডোরুক এক ভিডিও বার্তায় নিশ্চিত করেছেন যে ওই শহরে কোনো রুশ সৈন্য নেই। তিনি এমন কোনো স্থানীয় বেসামরিক নাগরিকের কথাও উল্লেখ করেননি যাদের হাত বেঁধে রাস্তায় গুলি করা হয়েছিল।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ বলেছেন: আমেরিকা বরং ইচ্ছাকৃতভাবে এই সত্যটি লুকাচ্ছে যে, বুচা শহরে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীই ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে ‘আজব’ এবং ‘নাটকীয়’ বলে উল্লেখ করে বলেছে: ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং তাদের মিডিয়ার প্রতিনিধিরা ওই শহরে প্রবেশ করার পরই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বুচাতে রুশ বাহিনীর তথাকথিত “অপরাধের প্রমাণ” তৈরি করতেই ওই নৃশংস ঘটনার অবতারণা করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

বুচা শহরে “ইউক্রেনীয় চরমপন্থীদের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড” নিয়ে পশ্চিমা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ এবং প্রচারের কথা উল্লেখ করে রাশিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি পোলানস্কি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন।

বুচায় ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতেই বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ শুরু হয়। এই ঘটনার নেপথ্যে ইউক্রেনের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সম্ভাব্য ভূমিকার কথাও শোনা যাচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের এই ধোঁয়াশাকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা মিডিয়াগুলো ঘোলাজলে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। যদিও সত্য স্পষ্ট করার বিষয়টি স্বাধীন ও আন্তর্জাতিক তদন্তের ওপর নির্ভর করে।

Advertisements