অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে যে ফরাসী সরকার নিজেকে মুক্ত চিন্তার চ্যাম্পিয়ন ভাবতে পছন্দ করলেও এটা আসলে তারা নয়।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থাটি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, “বাক স্বাধীনতার বিষয়ে ফরাসী সরকারের বক্তব্যগুলি তার নিজের নির্লজ্জ ভণ্ডামি গোপন করার পক্ষে যথেষ্ট নয়”।”মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যতক্ষণ না সবার জন্য প্রযোজ্য না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এর কোন অর্থ নেয়।“
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে নিজ শ্রেণিতে মহানবী মুহাম্মদের কার্টুন দেখানোর ফলে ফরাসী শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির হত্যার পরে প্রেসিডেন্ট ইমমানুয়েল ম্যাক্রো এবং তাঁর সরকার যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল, তা তাদের বাক স্বাধীনতার সমর্থক হওয়ার দাবিকে উপেক্ষা করে। কার্টুনকে বিরোধিতা করা লোকজনকে “বিচ্ছিন্নতাবাদী”, ধর্মান্ধ বা “ইসলামপন্থী” বলা হয়েছে, যা একদমই ঠিক নয়।
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ফ্রান্সে মতামত বা মত প্রকাশের অধিকারের নামে ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আপত্তিজনক মন্তব্য করাটাকে আইনগতভাবে সমর্থন দেওয়া হলেও, এটির বিরুদ্ধে মুসলিমদের ধর্মবিষয়ক মত প্রকাশনা ও স্বাধীনতা ফ্রান্সে রিপাবলিকান ইউনিভারসালিস্মের ছদ্মবেশে কণ্ঠরোধ করা হয়।
ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ফ্রান্সের মুসলমানরা স্কুলগুলিতে বা সরকারী খাতের চাকরি স্থলে ধর্মীয় চিহ্ন বা পোশাক পরতে পারে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়ে, যা তাদের মত প্রকাশের মুখে বিশাল একটি বাঁধা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ফ্রান্সের বেশ কয়েকটি ঘটনাকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে মুক্ত বক্তৃতার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবির সাথে বিরোধী।
এর মধ্যে ছিল ২০১৯ সালের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলাকালীন রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রনকে চিত্র পুড়িয়ে দেওয়ার পরে আদালতে “ঘৃণার” জন্য দোষী সাব্যস্ত করার উদাহরণ।
তাছাড়া প্রতিবেদনে বর্তমানে ফরাসী সংসদে আলোচিত একটি নতুন আইনের কথা উল্লেখ করা হয় যা সোশ্যাল মিডিয়ায় আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের চিত্রের ব্যবহারকে অপরাধমূলক করে তোলবে।
তাছাড়া এই বছরের জুনে, ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত জানায় যে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের প্রচারের জন্য ফ্রান্সে ১১ জন কর্মীর দোষী সাব্যস্ত করার কারণে তাদের মুক্ত বক্তব্যের অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।
এর বাহিরেও ফরাসী সরকার এখন “র্যাডিকালাইজেশন” এর অস্পষ্ট ধারণার ভিত্তিতে বিভিন্ন আর্ত-সামাজিক এবং রাজনৈতিক মুসলিম সংগঠনের বিলুপ্তকরণ এবং মসজিদ বন্ধের কাজে ব্যস্ত আছে, যা মুক্ত চিন্তা এবং মত প্রকাশের সকল ধারণার পরিপন্থি।
সূত্র –টি আর টি ওয়ার্ল্ড