কমলা ভারতের দুর্দিনে পাশে নেই
Advertisements

ভারতে করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের স্বাস্থ্যসেবা খাত। প্রতিদিনই ভাঙছে মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড। সংক্রমণ রেকর্ড হারে বাড়লায় টিকার প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু দেশটিতে প্রয়োজনের তুলনায় টিকার অভাব রয়েছে। ঠিক এই সময়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকে পাশে পাচ্ছে না ভারত।

এমন পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি আমেরিকার কাছে টিকা ও টিকা তৈরির কাঁচামাল রপ্তানির আবেদন করলেও সাড়া দিচ্ছে না বাইডেন প্রশাসন।

তবে ভারতের এমন দুর্দিনে কমলা হ্যারিস পাশে না দাঁড়ানোয় অবাক হয়েছেন অনেকেই। ভারতীয় বংশোদ্ভূত হয়েও তার চুপ থাকার বিষয়টি কেউ কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এ নিয়ে তার তীব্র সমালোচনাও করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার জানিয়েছে, ভারতের টিকার অভাবের কথা জানিয়ে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ করেছে একাধিক রাজ্য। এ অবস্থায় আমেরিকার কাছে টিকা ও টিকা তৈরির কাঁচামাল রপ্তানি করার আবেদন জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে, নিজের দেশের প্রত্যেককে টিকা দেয়ার পরেই তা বিদেশে পাঠানো হবে। এ প্রসঙ্গে চুপ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

ভারতের প্রয়োজনের সময় আমেরিকা এ ভাবে পিছিয়ে আসায় বিশ্বজুড়ে তাদের সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমনকি আমেরিকাতেও বাইডেন প্রশাসনকে কটাক্ষ করছেন অনেকে।

শুক্রবার ইউএস চেম্বার অব কমার্স বাইডেন প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছে, ভারতে টিকা পাঠানোর। চেম্বার অব কমার্সের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইরন ব্রিলিয়ান্ট বলেন, আমেরিকার কাছে প্রচুর টিকা মজুত রয়েছে। এই মুহূর্তে আমেরিকায় টিকা উৎপাদনের যা গতি তাতে মজুত টিকা বাদ দিলেও জুন মাসের মধ্যে সবাইকে টিকা দেয়া সম্ভব। তাই ভারত, ব্রাজিলের মতো দেশের প্রয়োজনে টিকা রপ্তানি করা উচিত।

বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ইউএস অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট (দক্ষিণ এশিয়া) নিশা বিসওয়াল টুইট করে বলেন, ভারতে এই মুহূর্তে যা অবস্থা, তাতে আমেরিকা ও আন্তর্জাতিক মহলের সাহায্যের প্রয়োজন। যখন অন্য দেশের সাহায্যের দরকার হয়েছে তখন ভারত সব সময় এগিয়ে এসেছে। এখন আমেরিকার উচিত সাহায্য করা।

আনন্দবাজার আরও জানায়, আমেরিকার এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষও। তার মধ্যে রয়েছেন আমেরিকার সাধারণ নাগরিকরাও। এ নিয়ে টুইটারে চলছে প্রতিবাদ।

কেউ বলছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ভারতের কাছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন চেয়েছিলেন তখন ভারত শুধু নিজেদের দেশের মানুষের কথা ভাবেনি। সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ পাঠিয়েছিল তারা। কিন্তু এখন আমেরিকা হাত গুটিয়ে নিয়েছে।

কেউ আবার বলছেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিভিন্ন দেশকে সঙ্গে নিয়ে এক উন্নত পৃথিবী গড়ার বার্তা দিয়েছিলেন বাইডেন। সেই প্রতিশ্রুতির কী হল?

অনেকে আবার কটাক্ষ করেছেন কমলাকে। তাদের বক্তব্য, ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলে অনেক সহানুভূতি আদায় করেছিলেন কমলা। কিন্তু যখন ভারতের টিকার প্রয়োজন তখন তিনিও চুপ। তা হলে কি সবটাই ক্ষমতায় আসার জন্য পরিকল্পনা করে করা হয়েছিল?

Advertisements