পূর্ব জেরুজালেমে উগ্র ডানপন্থি ইসরায়েলি দলগুলোর পতাকা মিছিলকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা থেকে নতুন করে সংঘাতের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,এই কর্মসূচিকে ইসরায়েলের উসকানি অভিহিত করে গাজায় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দল ফাতাহ।সংঘাতের হুমকি এসে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস থেকে।
ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিতায়েহ এক টুইটে বলেন, “দখলকৃত জেরুজালেমে উগ্রপন্থী ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীদের পতাকা মিছিল করতে দিলে তার ভয়ঙ্কর প্রতিঘাতের বিষয়ে আমরা সতর্ক করেছি।”
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই মিছিল শুরু হওয়ার কথা। অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই পতাকা মিছিলের পথ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, মিছিলে অংশ নেওয়া জমায়েতকে প্রাচীন নগরী দামাস্কাস গেইটের বাইরে অবস্থান নিতে দেবে পুলিশ। তবে তা পার হয়ে ফিলিস্তিনি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় যেতে দেওয়া হবে না।
পতাকা মিছিলের পথ পরিবর্তন হোক বা না হোক এ নিয়ে উত্তেজনা বাড়ছেই। গাজায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে ফিলিস্তিনিরা।
এই মিছিলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রাচীন নগরীতে জমায়েত হওয়ার ডাক দিয়েছে সশস্ত্র দল হামাস ও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ।
এর আগে হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা রকেট ছোড়ায় গত ১০ মে প্রাচীন নগরীর মুসলিমপ্রধান এলাকা ছেড়ে পতাকা মিছিলের পথ ঠিক হয়। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বহু হতাহতের পর ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে।
ইসরায়েলি ডানপন্থি দলগুলোর অভিযোগ, পতাকা মিছিলের রাস্তা বদল করে হামাসের কাছে নতি স্বীকার করছে নতুন সরকার। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় এই পথ পরিবর্তন করা হয়।
এই মিছিলকে ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দীর্ঘ এক যুগের শাসন ক্ষমতার অবসান ঘটিয়ে গত রোববার ইসরায়েলের দায়িত্ব নেন কট্টর জাতীয়তাবাদী এই নেতা। বেনেটের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্ত বিষয়ক মন্ত্রী সোমবার এ মিছিলের অনুমোদন দেন।
মিছিলের পথ পরিবর্তন কিংবা তা বাতিল করা হলেও জেরুজালেমে এই আয়োজন ঘিরে বিরোধী নেতা নেতানিয়াহু এবং বেনেটের জোটের ডানপন্থি দলগুলোর পক্ষ থেকে হামাসকে ভেটো ক্ষমতা দেওয়ার অভিযোগ আসছে।
ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থি আইন প্রণেতা ইতামার বেন-জিভির এক টু্ইটে বলেন, “ইসরায়েলের এখন হামাসকে হুমকি দেওয়ার সময়, ইসরায়েলকে হামাসের হুমকি দেওয়ার নয়।”
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মিছিল কেন্দ্র করে গাজায় উত্তেজনার আশঙ্কায় প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস তাদের কর্মী ও পরিবারের সদস্যদের মঙ্গলবার দিনটিতে নগরীর পুরনো অংশে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছে।
প্রাচীন নগরীকে অন্তর্ভূক্ত করে পূর্ব জেরুজালেমে রাজধানী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসরায়েল অধ্যুষিত পশ্চিম তীর ও গাজা এলাকা নিয়ে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় ফিলিস্তিনিরা।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখলে নেওয়া পূর্ব জেরুজালেমসহ পুরো জেরুজালেমকে ইসরায়েল নিজেদের রাজধানী মনে করলেও তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি।