কথায় বলে, কোনও গুণ নাই যার, সে বেগুন। কিন্তু বেগুনের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। পুষ্টিবিদ নাহিদা আহমেদ বলেন, আমরা যদি খাদ্যতালিকায় ১০০ গ্রাম বেগুন অন্তর্ভুক্ত করি, তাহলে ৪২ কিলো-ক্যালোরি খাদ্যশক্তি পেয়ে যাব। পাশাপাশি আমরা এখান থেকে যে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা পাব, সেটা হচ্ছে ২.২ গ্রামের মতো। এ ছাড়া বেগুন থেকে আমরা প্রোটিন পাই। বেগুন থেকে আমরা ১.৮ গ্রামের মতো প্রোটিন পেয়ে যাব।
বেগুন থেকে আমরা ক্যালসিয়াম পেতে পারি। বেগুন থেকে আমরা ২৮ মিলিগ্রামের মতো ক্যালসিয়াম পেতে পারি। এ ছাড়া বেগুন থেকে আমরা ভিটামিন সি ৫ মিলিগ্রামের মতো পেয়ে যাই। বেগুন থেকে আমরা আয়রনও পাই। বেগুনে ০.৯ গ্রামের মতো আয়রন পাব। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যচাহিদায় যেসব ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে, তার মধ্যে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, কপার এবং ভিটামিন বি৬-এর যে চাহিদা, বেগুন থেকে আমরা তার ৫ শতাংশ পেতে পারি।
প্রতিদিন বেগুন খেলে যা হয়
হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে-
বেগুনে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন যা হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে বেগুন-
বেগুনে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম। তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এটি আদর্শ। এর পাশাপাশি বেগুনে থাকা সাপোনিন নামক একটি উপাদান শরীরে ফ্যাট সঞ্চয়ে বাধা দেয়। তাই যাদের ওজন কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে, তাদের জন্য বেগুন অত্যন্ত কার্যকরী।
হিমগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়-
রক্তে হিমগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। অ্যানিমিয়ার ভুগতে শুরু করেন মানুষজন। আর ঠিক এখানেই মোক্ষম দাওয়াই হিসেবে কাজ করে বেগুন। কারণ এই সবজিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা হিমগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত করে-
বেগুনে থাকা ফেনোলিক উপাদান হাড় মজবুত করে। এটি হাড়ের মধ্যে উপস্থিত মিনারেলের ঘনত্ব বাড়ায়। অস্টিয়োপরোসিস সহ একাধিক সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। তবে শুধু ফেনোলিক নয়, বেগুনের ক্যালসিয়াম ও আয়রন হাড়কে আরও মজবুত করে তোলে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য-
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় বেগুন। এর মধ্যে উপস্থিত সাইটোনিউট্রিয়েন্টস ও পটাসিয়াম মাথার মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহের বিষয়টি সুনিশ্চিত করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এর জেরে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
ক্যানসার প্রতিরোধ-
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অ্যান্থোসায়ানিন থাকে। তাই বেগুন খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এই সবজিতে উপস্থিত উপাদানগুলি শরীরের ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। এমনকি বেগুনের খোসায় উপস্থিত সোলাসোডাইন হ্যামনিসোল গ্লাইকোসাইডসও অত্যন্ত কার্যকরী। এটি ক্যানসার কোষকে নির্মূল করে দেয়।
রেচক হিসেবে কাজ করে-
বেগুনে ফাইবার ও জলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাই আদর্শ রেচকের ভূমিকা নেয় এটি। বদহজমের মোকাবিলা করতেও সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।