গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির বৈশ্বিক দাবি সত্ত্বেও আমেরিকা, ইহুদিবাদী ইসরাইলের কৌশলগত মিত্র হিসাবে ওই প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। সেইসাথে সব ধরণের গোলাবারুদ ও অস্ত্র সরবরাহ করে গাজায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আগুনে ঘি ঢেলে যাচ্ছে।
এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা যুদ্ধে আমেরিকা কেন যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেছে তার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। এবিসি নিউজকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন: আমরা যখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা বলি, হামাস তখনও দৃঢ়তার সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে, তারা নতি স্বীকার করে নি। এমনকি তারা ৭ অক্টোবরের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর হুমকিও দিচ্ছে। এর ফলে গাজা সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে।
ব্লিঙ্কেন যেহেতু স্বীকার করেছেন ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন অস্ত্রে গাজায় নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েও হামাসের কোনো ক্ষতি করা সম্ভব হয় নি, তাহলে কীভাবে সম্ভব হবে? আদৌ কি হামাসকে নির্মূল করা যাবে? নারী-শিশু-বৃদ্ধ আর হাসপাতালের মতো নাগরিক স্থাপনায় মার্কিনি বোমা হামলা চালিয়ে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ হত্যা করে কি কোনো লাভ হবে? যারা ইসরাইলি স্থাপনাসহ তাদের সামরিক বাহিনীর অবিশ্বাস্য রকমের ক্ষয়ক্ষতি করেছে তারা কি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সবসময় বলেন-আত্মরক্ষার অধিকার ইসরাইলের রয়েছে। ইহুদিবাদী যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন: গাজাযুদ্ধ বর্তমান গতিতে কমপক্ষে আরও ২ মাস অব্যাহত থাকবে। তারপর হামাসকে নির্মূল করতে ‘ক্লিনজিং’ অভিযান চালানো হবে। আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থনের কারণেই তারা বিশ্ব জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে এভাবে ঔদ্ধত্য দেখানোর সাহস পাচ্ছে।
মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স যথার্থই বলেছেন: ‘ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে এভাবে গণহত্যা চালাতে পারে না। আমরা ফিলিস্তিনি জনজীবনের যে ভয়ানক ক্ষয়ক্ষতির সাক্ষী হয়েছি তা ঘটানোর অধিকার রাখে না ইসরাইল। ইসরাইল এসব করে গাজা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্ব জনমতের যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে’। এসব কারণেই গাজা যুদ্ধের ব্যাপারে বাইডেন সরকারের নীতিতে পরিবর্তন আনার দাবি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।