জম্মু-কাশ্মীরে ভয়াবহ গেরিলা হামলায় ৫ সেনা জওয়ান নিহত
Advertisements

জম্মু-কাশ্মীরে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর এই প্রথমবারের মতো পুঞ্চে বড় গেরিলা হামলার ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে অজ্ঞাত গেরিলারা রাজৌরি সেক্টরের ভিম্বার গলি এবং পুঞ্চের মধ্যে হাইওয়ে দিয়ে যাওয়া একটি সেনাবাহিনীর গাড়িতে গুলিবর্ষণ করে। এবং হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এরফলে সেনাবাহিনীর গাড়িটিতে আগুন ধরে গেলে পাঁচ সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত এক জওয়ানকে রাজৌরির সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জৈশ সমর্থিত সংগঠন পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।

নিহত জওয়ানরা হলেন, হাবিলদার মনদীপ সিং, ল্যান্স নায়েক দেবাশিস বাসওয়াল, ল্যান্স নায়েক কুলবন্ত সিং, সিপাহী হরকিশান সিং এবং সিপাহী সেবক সিং। এর মধ্যে ল্যান্স নায়েক দেবাশিস বাসওয়াল উড়িষ্যার বাসিন্দা, বাকি চারজন পাঞ্জাবের বাসিন্দা।

সেনাবাহিনীর নর্দার্ন কমান্ডের সদর দফতর থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, ‘(বৃহস্পতিবার), দুপুর আনুমানিক ৩টে নাগাদ সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ভিমবের গালি থেকে রাজৌরি সেক্টরের পুঞ্চে যাচ্ছিল। অজ্ঞাতপরিচয় জঙ্গিরা তার উপর হামলা চালায়। ভারী বৃষ্টিতে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ার সুযোগ নেয় জঙ্গিরা। সম্ভবত গ্রেনেড হামলার জেরেই গাড়িতে আগুন ধরে যায়।’

ফরেনসিক এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি দল ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি অভিযান চলছে। অন্যদিকে, জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) জম্মুর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, গোটা এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করতে ড্রোন এবং স্নিফার কুকুর ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা বলেন, রাজৌরি এবং পুঞ্চের সীমান্তবর্তী জেলাগুললোতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কঠোর নজরদারি চালানো হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) পিকে সেহগাল সতর্কতার অভাবকে হামলার জন্য দায়ী করেছেন। তিনি বলেন এটি একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি যে খারাপ আবহাওয়া, বৃষ্টি, কুয়াশা থাকলে এ ধরনের হামলা হতে পারে। সেজন্য রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে সতর্ক থাকা উচিত ছিল।

আগামী মে মাসে শ্রীনগরে বসতে চলেছে জি-২০ সম্মেলনের একটি বৈঠক। তার আগে গত সপ্তাহেই উপত্যকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। কিন্তু তার মধ্যেই গেরিলা হামলায় সেনা জওয়ানদের হতাহতের ঘটনা ঘটল।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহসভাপতি ওমর আবদুল্লাহ, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি সভানেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিসহ অন্যরা ওই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন।

ওমর আবদুল্লাহ বলেন, পুঞ্চে সন্ত্রাসী হামলার ভয়ঙ্কর খবর পাওয়া গেছে। এতে দায়িত্বরত অবস্থায় প্রাণ হারান ৫ সেনাসদস্য। আমি এই জঘন্য হামলার নিন্দা জানাই এবং নিহতদের প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা জানাই।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, এই খবর শুনে তিনি হতবাক হয়েছেন। এই কাপুরুষোচিত হামলার পেছনে যারা আছে তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।

Advertisements