বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার তমব্রু সীমান্তে সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) একজন কর্মকর্তা নিহত এবং র্যাবের এক কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। সোমবার মাদক চোরাচালানকারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এই সংঘর্ষ হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযান পরিচালনাকালে মাদক চোরাচালানকারী সন্ত্রাসীদের সাথে বাংলাদেশের ভেতরে তমব্রু সীমান্ত এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অবস্থান করছে। সেখানেই রোহিঙ্গা মাদক কারবারিদের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সকালে রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২ এর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর ইমতিয়াজ আহমেদ রেডিও তেহরানকে বলেছেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত এখন রোহিঙ্গা ও মাদকের নিরবচ্ছিন্ন আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ এই সীমান্তে মাদকের সহজ রুট তৈরি করেছে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তাদের অভিযানের কারণে তাদের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো এখন সীমান্তের পাহাড় ও গহীন জঙ্গলকে আস্তানা বানাতে চায়। আর তাদের সেসব দলকে বা গ্রুপকে চালাতে আর্থিক সহায়তার প্রধান উৎস বানাচ্ছে মাদক চোরাচালানকে। এখানে মিয়ানমারের প্রছন্ন উদাসীনতায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে না, ফলে বাংলাদেশ সীমান্তে ঝুঁকি বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলও বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত ইস্যুও রোহিঙ্গা বিষয়ে প্রায়োগিক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে সংকট দিন দিন বাড়ছে। তাই দ্রুত পশ্চিমা বিশ্বকে এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। নইলে মিয়ানমার জান্তা সরকারের কারণে ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশের এ দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত।
সূত্রঃ পার্সটুডে