গাজীপুর কাপাসিয়ায় ভূমিহীন ও দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ করা প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের খাসজমি পেয়েছেন সচ্ছল নাজমুন নাহার হাসিনা নামে এক ইউপি সদস্য।
হাসিনা উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য।
খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়ার তালিকা প্রকাশের পর দেখা গেল, দেওনা মৌজার খতিয়ান নং-১ ও দাগ নং ৪০২-এর আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘেঁষে ১০ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত পেয়েছেন ওই ইউপি সদস্য হাসিনা। ওই জমি উপজেলার পাশের ইউনিয়ন এবং পাকা তিন রাস্তার মোড়ে হওয়ায় এর বাজারমূল্য বেশি, প্রায় অর্ধকোটি টাকা!
জানা গেছে, এই ইউপি সদস্য ভূমিহীন তো নন-ই, বেশ সচ্ছল ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে জমি ও সম্পদের মালিক তিনি।
নাজমুন নাহার হাসিনার পরিবারের পক্ষ থেকেই বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে।
এই ইউপি সদস্যের ছোট মামা ওয়াজউদ্দিন বলেছেন, হাসিনা ভূমিহীন না। হাসিনা নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার চন্দন বাড়ি ইউনিয়নের কুতবদি গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেন বিল্লালের মেয়ে। বাবার মৃত্যুর পর কোনো ভাইবোন না থাকায় সেখানের জমি বিক্রি করে মাকে নিয়ে কাপাসিয়ার উরুন গ্রামে নানাবাড়ি চলে আসেন। নানার কাছ থেকে ১০ শতাংশ ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমিতে প্রায় ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে চমৎকার একটি টিনশেড আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন।
হাসিনার বড় মামা ফাইজউদ্দিন ও মামি আছমা খাতুন জানান, তার মাকে প্রায় ১০ শতাংশ ওয়ারিশ জমি দিয়েছিলাম। তার মা এখন জীবিত নেই, সেই সূত্রে হাসিনা জমির মালিক। সে ভূমিহীন না। হাসিনা তার নিজের জমিতে সুন্দর একটি বাড়ি তৈরি করেছে, সে পূর্ব থেকেই সচ্ছল।
স্থানীয়দের প্রশ্ন- তবে খাসজমির বন্দোবস্ত তালিকায় কীভাবে এই সচ্ছল ইউপি সদস্যের নাম এলো? খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়ার তালিকা প্রকাশের পর স্থানীয় ভূমিহীন ও দরিদ্রদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপার নাজমুন নাহার হাসিনা বলেন, বাবা মৃত্যুর পর আমার কোনো ভাইবোন না থাকায় কিছু জমি চাচাতো ভাইদের দিয়ে বাকি জমি যা ছিল বিক্রি করে কাপাসিয়ায় নানাবাড়ি এসে একটি বাড়ি করেছি এবং ইউপি নির্বাচনে কিছু টাকা খরচ করেছি। একই এলাকার দেওনা আশ্রয়ণ প্রকল্পের তিন রাস্তার মোড়ে ১০ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিস কানুনগো নূরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।