গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করল বাংলাদেশ
Advertisements

বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের পিছিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স বা আরএসএফ’র প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, তাদের প্রতিবেদন বিদ্বেষপ্রসূত, আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য।

বৃহস্পতিবার ( ৫ মে) দুপুরে মন্ত্রী তার চট্টগ্রামস্থ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তাদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

‘প্যারিসভিত্তিক সংস্থা আরএসএফ সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা গতবছর এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে প্রচণ্ড আপত্তিকর মন্তব্য ছিল। তারা বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়েও অসত্য, ভুল এবং মনগড়া রিপোর্ট করে। সে সময় বাংলাদেশের বৃহত্তর সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো যেমন প্রতিবাদ জানিয়েছিল, একইভাবে প্যারিস প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশি ফ্রান্সের আইনজীবীর মাধ্যমে আরএসএফ এর বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ দিয়েছিল।’

আওয়ামী লীগ নেতা ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সেই আইনি নোটিশে বলা ছিল, তারা কোনো দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের ব্যাপারে এরকম মন্তব্য করতে পারে না, ফ্রান্সের আইনেই সেটি বলা আছে, অর্থাৎ তারা ফ্রান্সের আইন লঙ্ঘন করে সেটা করেছে। সুতরাং তারা এখন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, এটিও কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, এটি আপত্তিকর ও বিদ্বেষপ্রসূত।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরো বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে, সেই সমস্ত সূত্র থেকে আরএসএফ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং নিজেরাও বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে যে রিপোর্ট দেয়, সেটির কোনো মূল্য নেই।তবছর বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বা বিএফইউজে-সহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন তাদের সেই প্রতিবেদন ও মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, বিবৃতি দিয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, সেই একই সংগঠন যখন আবারও বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়ে কথা বলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিতে হবে, তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।

ডিজিটাল বা সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়েও আরএসএফ কথা বলেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডিজিটাল বিষয়টি যখন ছিল না তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টিও ছিল না। যখন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল বিষয়টি এসেছে, তখন গণমানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ আইন করেছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই আইন হয়েছে ও হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, ভারত, পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে, বাংলাদেশেও হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন ‘এই আইন সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এবং এই আইনের সুযোগ গ্রহণ করে অনেক সাংবাদিকও তাদের মানহানিকর বিষয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সাংবাদিক হোক, সাধারণ মানুষ হোক কারো বিরুদ্ধে এই আইনের অপব্যবহার হওয়া উচিৎ নয়, সে নিয়ে আমরা সতর্ক আছি’।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে বাংলাদেশে অনেক আলোচনা হয়, কেউ কেউ সমালোচনাও করেন, সে ধরণের ধারা ভারত পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের এ সংক্রান্ত আইনে সন্নিবেশিত আছে।

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফ্রেমওয়ার্ক ল করছে, যেটার অধীনে বিভিন্ন দেশে পদক্ষেপ নেওয়া হবে, আইন করা হবে। ফ্রান্সেও একই ধরনের আইন আছে। সুতরাং আরএসএফ আগে থেকেই যেহেতু বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত, সেজন্যই তারা বাংলাদেশকে কয়েক ধাপ নামিয়ে দিয়েছে। আমরা এটি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি’।

Advertisements