সেই সিডন্সই কি ব্যাটিং কোচ
Advertisements

জাতীয় দলের বিদেশি কোচদের মধ্যে খুব কম সংখ্যাকই আছেন, যারা পরিবার নিয়ে ঢাকায় থেকেছেন। যারা থেকেছেন, তাদেরই একজন জেমি সিডন্স। কাজে ফাঁকি দেওয়া বা অতিরিক্ত ছুটি ভোগ করার দুর্নামও ছিল না তার। এককথায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়ে ছিলেন সিডন্স। যে কারণে ২০১১ সালে বিশ্বকাপের পর প্রধান কোচ হিসেবে তার সঙ্গে তৃতীয় মেয়াদে চুক্তি না বাড়ালেও বাংলাদেশে থেকে যেতে চেয়েছিলেন বিকল্প চাকরি নিয়ে। এক দশক পর এসে তার সে চাওয়া পূরণ হতে পারে। জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন তিনি। বিসিবির পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে আছেন এ অস্ট্রেলিয়ান।

একজন স্পিন কোচও নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বোর্ড। সাকিবদের স্পিন কোচ করা হতে পারে রঙ্গনা হেরাথকে। শ্রীলঙ্কান বাঁহাতি এ স্পিনার পছন্দের শীর্ষে। বিসিবির একটি সূত্র জানায়, সিডন্স ও হেরাথের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে হেরাথের ব্যাপারে সর্বসম্মতি থাকলেও সিডন্সকে নিয়ে কারও কারও আপত্তি আছে।

সিডন্স পরীক্ষিত কোচ। তার সময়েই বড় দলের বিপক্ষে দেশে-বিদেশে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছেন সাকিবরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজ জেতার কৃতিত্ব ঐতিহাসিক। একদিনের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল তাদের মাটিতে। যদিও ২০০৯ ও ২০১০ সালের টি২০ বিশ্বকাপে ভালো করতে পারেনি দল। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে পারেনি টাইগাররা। আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসকে হারালেও উইন্ডিজের কাছে ৫৮ আর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭৮ রানে অলআউট হয়েছিল ঘরের মাঠের সেই বিশ্বকাপে। তবে সিডন্সের চার বছরের কোচিংয়ে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। তামিম, সাকিব, মুশফিকদের ব্যাটিং নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন তিনি। তামিম, মাশরাফিরা সেটা স্বীকারও করেন। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিমের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ রয়েছে তার।

সিডন্সকে ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিসিবির একজন পরিচালক বলেন, ‘জেমির সঙ্গে কথা হয়েছে। তালিকায় সবার ওপরেও আছে সে। নিয়োগের বিষয়টি হয়তো চূড়ান্ত করা হয়নি।’ জন লুইসকে খণ্ডকালীন নিয়োগ দিয়ে ভেতরে ভেতরে ব্যাটিং কোচ খুঁজছিল বিসিবি। বিশেষ করে জনের কাজ পছন্দ না হওয়ায় প্রক্রিয়াটা দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে চুক্তিভিত্তিক ব্যাটিং কোচ ছিলেন তিনি। লঙ্কানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে ইংল্যান্ড ফিরে গেছেন জন।

জাতীয় দল সূত্রে জানা গেছে, জনের ওপর বিরক্ত ছিলেন ক্রিকেটাররা। জাতীয় দল-সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, জন চরম ফাঁকি দিয়েছেন। বিদেশে কোনো কাজই করতেন না। মিরপুরে ফিল্ডিং করাতেন। ব্যাটসম্যানদের নিয়ে খুব একটা কাজ করেননি তিনি। মূলত স্থায়ী ব্যাটিং কোচ না পাওয়ায় আপৎকালীন কাজ চালানো হয়েছে জনকে দিয়ে। টাইগারদের জিম্বাবুয়ে সফরে দেখা যেতে পারে নতুন ব্যাটিং কোচকে।

স্পিন কোচ হিসেবে রঙ্গনা হেরাথ অবশ্য অনভিজ্ঞ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও এখনও ঘরোয়া লিগে খেলেন ৪৩ বছর বয়সী বাঁহাতি এই স্পিনার। গত মার্চেও লিগ খেলেছেন। রঙ্গনার কোচিং অভিজ্ঞতা না থাকলেও বোলার হিসেবে তিনি উঁচু মানের। ৯৪ টেস্ট খেলে ৪৩৩ উইকেট শিকার তার। ওয়ানডেতে ৭৪ আর টি২০-তে ১৮ উইকেট নিয়েছেন। তাকে নিয়োগ দেওয়া হলে নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টরির স্থলাভিষিক্ত হবেন।

বিসিবি কর্মকর্তা জানান, হেরাথকে বছরে ২০০ দিন কাজের শর্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হেরাথ চান, ১২০ দিন কাজ করতে। এ নিয়ে বোর্ড ও হেরাথের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। তবে বিসিবির অন্য একটি সূত্র বলছে, ‘এ দুইজনকে বাছাই করা হলেও পরিচালকদের মধ্যে মতদ্বৈধতা রয়েছে, যেটা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

অবশ্য বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান জানান, দু’জন না হলেও অন্তত একজন নিয়োগ পাবেন। আর সেটা হেরাথই হবেন।

সূত্রঃ সমকাল

Advertisements