টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনে দিশেহারা পাড়ের মানুষ । এতে নদীভাঙনের পাশাপাশি প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ফলে, বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুতগতিতে পানি বাড়তে শুরু করায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙন শুরু হয়েছে।
এদিকে, কাজীপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া রক্ষা বাঁধ, ফসলি জমি এবং চৌহালী উপজেলার মিটুয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর-সলিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিনানুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বহু ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। এতে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষেরা ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে। পানি বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন নদীর নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা জানান, শুনেছি চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চল রক্ষায় স্থায়ী তীর সংরক্ষণে ৪৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায়। তবে, কবে নাগাদ এটি অনুমোদন ও কাজ শুরু হবে, তা জানা নেই। বর্ষার আগেই কাজটি শুরু করলে হয়তো দক্ষিণাঞ্চলের বহু বাড়ি-ঘর রক্ষা পেত। গত এক সপ্তাহে নদীপাড়ের প্রায় ৫০টি বাড়ির ভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে।
কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া ইউপির সদস্য চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, ‘যমুনার ভাঙনে নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের অনেকগুলো বাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। যমুনায় পানি বৃদ্ধিতে নাটুয়ারপাড়ার পশ্চিমে বেশ কিছুদিন ধরে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হায়দার আলী বলেন, ‘কাজীপুর উপজেলার নাটুযারপাড়া বাঁধটি রক্ষায় আমরা এরই মধ্যে আট হাজার বস্তা ফেলেছি। আবারও ভাঙন দেখা দেওয়ায় আরও দুই হাজার বস্তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে এরই মধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। বাঁধের নির্মাণের কাজ শেষ হলে এ এলাকায় আর ভাঙন দেখা দেবে না। বর্ষা মৌসুমে ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।