জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিলেন রিজভী
Advertisements

আমি ভারতের প্রার্থী-মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মান্নানের এই বক্তব্যে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রফেসর আব্দুল মান্নানের এই বক্তব্য চরম রাষ্ট্রদ্রোহিতা। অথচ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা প্রতিবাদেরও সাহস পায় না সরকার বা নির্বাচন কমিশন। তার মানে তারা স্বীকার করে নিয়েছে ভারত তাদের অনুগত বহু সংখ্যককে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা জানতে চাই, প্রফেসর আব্দুল মান্নানের মতো আর কে কে ভারতের প্রার্থী তার তালিকা প্রকাশ করা হোক। মঙ্গলবার বিকালে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপিসহ সকল দলকে বাদ দিয়ে এই পাতানো নির্বাচনের অন্যতম মদদদাতা হিসাবে পার্শ্ববর্তী দেশের নাম সর্বজন বিদিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে একদলীয় নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গাইছেন। ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশে এসে বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা চান বাংলাদেশের গণতন্ত্র-মানুষের অধিকার চান না। এখন তাদের থলের বিড়াল বেরুতে শুরু করেছে। ভারত মনোনীত প্রার্থীরা বীরদর্পে বলছেন-‘আমাকে ভারত মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী।

আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ তিনি বলেন, মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের সাবেক দুই মেয়াদের অটোপাস সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেছেন, আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ তাহলে বাংলাদেশ কি পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ? তলে তলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব কি বিকিয়ে দেয়া হয়েছে ? ভারত এখন তাদের এদেশীয় অনুচরদের নমিনেশনও দিচ্ছে? প্রফেসর আব্দুল মান্নানের এই বক্তব্য চরম রাষ্ট্রদ্রোহিতা। অথচ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা প্রতিবাদেরও সাহস পায় না সরকার বা নির্বাচন কমিশন। তার মানে তারা স্বীকার করে নিয়েছে ভারত তাদের অনুগত বহু সংখ্যককে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা জানতে চাই প্রফেসর আব্দুল মান্নানের মতো আর কে কে ভারতের প্রার্থী তার তালিকা প্রকাশ করা হোক। দেশের জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান গণতন্ত্র হত্যার জন্য ভারতের প্রার্থীদের বিজয়ী করার এই পাতানো নির্বাচনে কেউ ভোট দিবেন না। দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে না চাইলে ভোট বর্জন করুন। তারা নির্বাচিত হলে দেশকে ভারতের হাতে তুলে দেয়াটা অসম্ভব কিছু না।

রিজভী বলেন, আগামী ৭ই জানুয়ারি ‘আমি আর মামুদের’ একদলীয় ডামি নির্বাচন ঘিরে একদিকে চলছে রীতিমতো রঙ-তামাশা। আর অন্যদিকে নৌকা-ডামির কামড়া-কামড়ি, গোলাগুলি, খুনোখুনি, সংঘাত-সহিংসতায় জনপদগুলো বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষকে জোর করে মিছিলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এলাকা ছাড়া করার ভয় দেখানো হচ্ছে। আর নৌকার প্রচার মাইকের আওয়াজ শুনলেই লোকজন সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। ভোটের উৎসবের বদলে আতংক আর উৎকণ্ঠা সর্বত্রই। ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সর্বত্রই। বিরোধীদলহীন পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের এই নির্বাচনে ভোটারদের ন্যূনতম আগ্রহ না থাকলেও গণতান্ত্রিক বিশ্বকে তথাকথিত ভোটের উৎসব দেখানোর জন্য অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে তাদের রেহায় নেই। তারা দেশটাকে যুদ্ধাবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। সারাদেশে এখন আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে নামানো হয়েছে আমি আর ডামি’র ভোটরঙ্গে।

তিনি আরো বলেন, ইসির কাছে নির্বাচন গৌণ। তারা চাচ্ছেন মেরে কেটে হুমকি-ধামকি দিয়ে যে যেভাবে পারে ভোট কেন্দ্রে নাবালক-সাবালক-ভোটার-অভোটার জোগাড় করে লোকারণ্য দেখাও। এটাই গণভবনের নির্দেশ, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার উৎসবমুখর নির্বাচনী মডেল। কিন্তু ভোট নাটক যতই করেন কোন লাভ নেই। সকলি গরল ভেল।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের গ্রেপ্তার, মামলা, আসামি, আহত ও মৃত্যুর সংখ্যা তুলে ধরেন রিজভী। তিনি জানান, এসময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৭৫ জন নেতাকর্মীকে, মারা গেছেন ১ জন, আহত হয়েছে ২০ জন এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে ৪টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩৬৫ জন নেতাকর্মীকে।

Advertisements