প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের গবেষণা একটি ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে, আর তা হলো স্বাস্থ্য খাত। সরকার চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছে। আমি মনে করি এটিকে আরও গুরুত্ব দেয়া দরকার।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) এবং এর সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসচ্ছল-মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি-টিউশন ফি বিতরণ উদ্বোধন, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৩-এর সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বৃত্তি পুরস্কার-২০২২ প্রদানের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কৃষি গবেষণা যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। এখন চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণায় আরও গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। সমুদ্রবিজ্ঞান গবেষণা ও ব্লু ইকোনমিকে গুরুত্ব দিয়েছে।
কারণ, এটি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি বলেন, আমাদের শিশুরা খুবই মেধাবী। তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিলে বাংলাদেশকে কেউ পেছনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে না। যা আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। তিনি বলেন, সরকার গবেষণা-উদ্ভাবন বাড়াতে উপবৃত্তি দিয়েছে। আজ আমাদের শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছে এবং এখন তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রকাশ পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ মেধা বিকাশে একটি মহৎ উদ্যোগ, যেখান থেকে অনেক মেধাবী শিশু বের হয়ে আসছে। সরকারপ্রধান বলেন, শিক্ষার্থীদের কারও কাছে মাথা নত না করে বিশ্বমঞ্চে আত্মমর্যাদার সঙ্গে আবারো মাথা উঁচু করে দেশকে এগিয়ে নিতে সঠিকভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ, এই বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে, আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মান নিয়ে বিশ্ব অঙ্গনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা কারও কাছে মাথা নত করবো না। এটি আমাদের অঙ্গীকার। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সব সময় এ কথা মনে রাখতে হবে যে, এ জাতি বীরের জাতি।
তারা কারও কাছে মাথা নত করবো না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেল। আমরা পথ দেখিয়েছি। আমাদের মেধাবী শিশুরা এই পথেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ২০৪১ সালের মধ্যে এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই দেশে থাকবে স্মার্ট জনগণ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ। শেখ হাসিনা বলেন, আজকের যুগ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার। তাই শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে প্রস্তুত করতে হবে। অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সত্যিই আশাবাদী, এই দেশকে আর কেউ পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। সরকার উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সেশনজট ও অস্ত্র সহিংসতা থেকে মুক্ত রাখতে সফলভাবে সক্ষম হয়েছে। ৬ থেকে ৮ বছর ধরে সেশনজট ছিল। অতীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অস্ত্রের ঝনঝনানি হতো। আমরা অন্তত দাবি করতে পারি যে, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ক্যাম্পাসকে সেই পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে পেরেছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৯ সাল থেকে একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে।
গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় দেশ উন্নয়নের যাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। সারা বিশ্বে এখন জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশের মানুষও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে, তবুও এখানে খাদ্যশস্য পাওয়া যায়। খাদ্যশস্যের অভাব নেই।