পেয়ারা পাতার ১৫ টি উপকারিতা
Advertisements

উপকারী ফল হিসেবে পেয়ারা আমাদের অনেকের কাছেই পরিচিত। পেয়ারায় প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, লাইকোফেন, পটাসিয়াম ও ফাইবার রয়েছে। পুষ্টিগুনে ভরপুর এই ফলের পাতাও আমাদের স্বাস্থের জন্য কম উপকারী নয়। আসুন, এই পেয়ারাপাতার কিছু বিষ্ময়কর উপকারীতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

১.ওজন কমাতে সাহায্য করে
পেয়ারা পাতা জটিল কার্বহাইড্রেটকে সুগারে রুপান্তরিত হতে বাধা দেয়। এ ধরনের সুগার অতিরিক্ত ক্ষুধা ও ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এ কারনেই পেয়ারা পাতা ওজন কমাতে এতটা কার্যকর।

২.পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দুর করতে সাহায্য করে
পেয়ারা পাতায় ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধী শক্তি থাকায় এরা অন্ত্রকে আরও ক্ষারীয় করে সেখানে জীবানু বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। এছাড়াও এরা পরিপাক কাজে বাধা সৃষ্টিকারী অতিরিক্ত মিউকাস ক্ষরন রোধ করতে পারে। তাই পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা ও ডাইরিয়া প্রতিরোধে পেয়ারা পাতা অত্যন্ত উপকারী।

৩.ডায়বেটিস এর প্রভাব কমাতে সাহায্য করে

পেয়ারা পাতা শরীরে ইনসুলিন এর মাত্রা বৃদ্ধি না করেই সুগারের পরিমান কমিয়ে ফেলতে পারে। ফলে এটি ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।

৪.ক্যান্সারের মতো রোগের বিরুদ্ধে সাহায্য করে

পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোফেন থাকায় এটি স্তন ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার ও মুথের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে কার্যকরী। গবেষনায় দেখা যায় যে, জরায়ু ক্যান্সারের বৃদ্ধির জন্য দায়ী অ্যান্ড্রেজেন তৈরি রোধে পেয়ারার রস বিশেষভাবে ভুমিকা রাখে।

৫.সর্দি-কাশি নিরাময়ে সাহায্য করে
ব্রংকাইটিস এর মতো রোগ উপসমের পাশাপাশি শর্দি কাশি নিরাময়েও পেয়ারা পাতা সাহায্য করে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের কাঁচা ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি ও আয়রন যা অতিরিক্ত মিউকাস ক্ষরনে বাধা দেয় ও জীবানুর বংশবৃদ্ধি রোধ করে। এখানে মনে রাথা প্রয়োজন যে, এক্ষেত্রে কাঁচা পেয়ারা কার্যকরী হলেও পাঁকা পেয়ারা আবার উল্টো ফলাফল দিতে পারে অর্থাৎ শর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়িয়ে তুলতে পারে।

৬.অ্যালার্জীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধ করে
পেয়ারা পাতা দেহের হিস্টামিন তৈরি প্রক্রিয়া নিরাময় করে অ্যালার্জীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে পারে। এছাড়াও পোকামাকড়ের কামড়ের কারনে ফোলা কমানোর জন্যও পেয়ারা পাতা ব্যাবহা্র করা যেতে পারে।

৭. মাড়ির রক্তপড়া, মুখের ঘা অথবা মুখে ব্যাথার উপসম করে
পেয়ারা পাতা কিছুক্ষন ধরে চিবিয়ে নিন। এতে পেয়ারা পাতার রসের কল্যানে মাড়ির রক্তপড়া, মুখের ঘা ও মাড়ির ব্যাথায় কিছূটা আরাম পাওয়া যাবে।

৮.ব্রন কমাতে সাহায্য করে
পেয়ারা পাতা পিষে ব্রনের ও ওপর লাগালে পেয়ারা পাতার মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ব্রন কমাতে সাহায্য করবে। একই পদ্ধতিতে মুথের কালোদাগও দুর করা যায়, শুধু সাথে কিছুটা পানি মিশিয়ে নিন।

৯.অকালেই মুখে বার্ধক্যের ছাপ দুর করে
ওপরের পদ্ধতিতে মুখে পেয়ারা পাতা বাটা লাগিয়ে কম বয়সেই মুখে থাকা বয়সের ছাপকে দুর করতে পারবেন।তাই সুন্দর ত্বক পেতে পেয়ারা খেতে পারেন অথবা কচি পাতা বা পেয়ারা পেস্ট করে মুখে মাখতে পারেন।

১০.চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়ক
গরম পানিতে পেয়ারা পাতা সেদ্ধ করে নিয়ে তা চুলে লাগিয়ে চুল পড়া রোধ করা যায়। তবে মাথায় লাগানোর আগে পানি পুনরায় ঠান্ডা করে নিতে ভুলবেন না।

১১.রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে
পেয়ারা পাতা রক্তকে অতিরিক্ত ঘন হওয়া থেকে রোধ করে ও দেহে রক্তচলাচল সচল রাথার মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে। পেয়ারা পাতা উচ্চ ফাইবার ও হাইপোগ্লাইসেমিয়া ধর্মী হওয়ায় এটি সহজেই উচ্চ রক্তচাপ এর বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে।

১২.আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে
পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি৩ (নিয়াসিন) ও বি৬ থাকায় এটি মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রক্ত চলাচল ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে নিয়াসিন গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে।

১৩.থাইরয়েডের কার্যক্রম সুস্থ ও সচল রাখে
পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমানে কপার থাকায় এটি আমাদের থাইরয়েড সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। দেহে হরমোন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রন ও সকল অঙ্গের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রনকারী গ্রন্থিগুলোর মধ্যে থাইরয়েড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। কপার এর কাজ হলো থাইরয়েড গ্রন্থি পুরো দেহের প্রয়োজনীয় হরমোন ঠিকমতো তৈরি করছে কি-না এবং হরমোনগুলো পুরোপুরি কাজে লাগছে কি-না তা খেয়াল রাখা।

১৪.কোষ্ঠকাঠিন্য উপশমে সাহায্য করে
পেয়ারা পাতায় প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে। এটি দেহের রেচনকার্যে সহায়তা করে এবং শরীরের বর্জ্য নিষ্কাশনের পর দেহকে পূনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।

১৫.দৃষ্টিশক্তি উন্নতিতে সাহায্য করে

উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ হওয়ায় পেয়ারা পাতা দৃষ্টিশক্তি উন্নতিতে ব্যাপকভাবে ভুমিকা রাখে। চোখের ছানি, বয়সজনিত চোখের সমস্যা সহ চোখের সামগ্রিক স্বাস্থের উন্নয়নে পেয়ারা পাতা ভালো ফলাফল দিতে পারে।

রাইসুল মুশফেক

Advertisements