‘সাংসারিক জীবনের ২২টি বছর পর আমি জানতে পারলাম আমার বিশ্বাস, ভরসা, আশা, অহংকার সবকিছুই ভেঙেচুরে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। তাই আজ জীবনের কাছে হেরে গেলাম, পৃথিবী আমার কানে কানে স্লোগান দিচ্ছে তাই পৃথিবীর কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থী যে, ব্যর্থ জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক অনেক ভালো। ক্ষমা করে দিও। এর পুরোটাই আমার নিজের দায়, কাউকে দিও না। দোষ আমার। বিদায় তোমাদের-মুন্নি।’
ডায়েরিতে এমন একটি চিরকুট লিখে বিয়ের ২২ বছর পর গাজীপুরের টঙ্গীতে মাহমুদা আক্তার মুন্নি (৪০) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় মোক্তারবাড়ি এলাকার বাদশা কাজীর বাড়ির চারতলা ভাড়া বাসা থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পশ্চিম থানা পুলিশ।
নিহত মুন্নি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার পাকুল্লা গ্রামের মৃত বাচ্চু ফকিরের মেয়ে।
আশপাশের ভাড়াটিয়ারা জানান, স্বামী ও দুই ছেলেসন্তান নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন মুন্নি। রংয়ের কন্ট্রাক্টর স্বামী জাকির হোসেনের সঙ্গে মুন্নির সাংসারিক খুঁটিনাটি বিষয়াদি নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকত। মঙ্গলবার সকালে মুন্নির স্বামী ও বড় ছেলে কাজের উদ্দেশ্যে বাসার বাইরে যান এবং ছোট ছেলে জাবেদ বাসার বাইরে খেলাধুলা করছিল। পরে দুপুরে জাবেদ এসে ভেতর থেকে আটকানো দেখে দরজা খোলার জন্য তার মাকে ডাকাডাকি করে।
ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে সে কান্নাকাটি শুরু করে। এ সময় আশপাশের ভাড়াটিয়ারা এসে জানালা দিয়ে চাবি বের করে দরজা খুলে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় মুন্নিকে দেখতে পেয়ে থানা পুলিশে খবর দেন। পরে পশ্চিম থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় পাশে পড়ে থাকা একটি ডায়েরিতে চিরকুট লেখা উদ্ধার করে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি শাহ আলম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে।