গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়িতে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে দাম্পত্য কলহের জেরে আবুল হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তির গোপনাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলেছে তার প্রথম স্ত্রী। এ ঘটনায় প্রথম স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কোনাবাড়ী থানার জরুন উত্তরপাড়া আব্দুর রশিদের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত নিপা আক্তার (৩৫) পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানার দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। তার স্বামী আবুল হোসেন (৪০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার কৃষ্ণকাঠি গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় প্রথম স্ত্রী নিপা আক্তারকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন আবুল হোসেন। তারা দু’জনেই পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। আবুল হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসনা বেগম পাবনায় থাকেন। আবুল হোসেনের উভয় সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। অভাব অনটনের সংসারে নানা বিষয়াদি নিয়ে আবুল হোসেনের সাথে নিপা আক্তারের ঝগড়া বিবাদ হতো। গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আবুল হোসেনের চিৎকারে সবার ঘুম ভেঙে যায়। প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে তার স্ত্রী নিপা আক্তার বলেন, তার স্বামীর গোপনাঙ্গে পোকায় কামড় দিয়েছে। পরে নিপা নিজেই আহত স্বামী আবুল হোসেনকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ও পরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে আবুল হোসেনকে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য উত্তরার শিন শিন জাপান হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। রোববার রাতে বাসায় ফিরে এসে নিপা আক্তার প্রতিবেশীদের জানায় আবুল হোসেন সুস্থ্য আছেন। সোমবার বিকেলে নিপা বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশকে অবহিত করে। খবর পেয়ে কোনাবাড়ি থানা পুলিশ নিপাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জনান, আবুল হোসেনের পুরুষাঙ্গের অধিকাংশ ধারালো অস্ত্র বা ব্লেড দিয়ে কাটা হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় তাকে এ হাসপাতালে আনা হয়।
প্রতিবেশীরা জানান, প্রথম স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় এক ছেলে সন্তানের জননী নিপাকে ডিভোর্স দিয়ে হাসনা বেগম নামের এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আবুল হোসেন। দ্বিতীয় সংসারেও তার এক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। ইতোমধ্যে নিপাকে পুনঃরায় বিয়ে করেন আবুল হোসেন। এ নিয়ে তাদের মাঝে ঝগড়া বিবাদ শুরু হলে দ্বিতীয় স্ত্রী হাসনা হেনা পাবনায় গিয়ে বসবাস করতে থাকেন। গত কয়েকদিন ধরে আবুল হোসেন ও নিপার মাঝে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। দাম্পত্য কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আহতের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসনা বেগম জানান, স্বামী আবুল হোসেন শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ঠিকমতো কাজ করতে পারতেন না। তবে কী কারণে প্রথম স্ত্রী নিপা আক্তার এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বুঝতে পারছি না। আবুল হোসেন বর্তমানে উত্তরার শিন শিন জাপান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম জানান, লিঙ্গ কর্তনের ঘটনায় আহতের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসনা বেগম থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় আহতের প্রথম স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।