ধর্ষণের অভিযোগে সাখাওয়াত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
Advertisements

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধানের নামে গৃহকর্মী কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) করেছে আদালত। গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্বেও আসামি তার দলীয় প্রভাব দেখিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানা যায়। পুলিশ বলছে থানায় এখনও ওয়ারেন্টের কাগজ আসেনি।

গত বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই ২০২৩) ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল’ গাজীপুর আদালতের বিচারক এ গ্রেফতারি পরোয়ানার নির্দেশ দেন। ওয়ারেন্টের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পেশকার মাইন উদ্দিন কিরণ।

গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর জানান, ‘থানায় এখনো গ্রেফতারি পরোয়ানার কাগজ আসেনি। এলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

এদিকে ধর্ষণে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি না দেয়ায় এলাকার সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সরকার আইনের ধারা ৩৪ এর (১) অনুচ্ছেদে রয়েছে, চেয়ারম্যান বা সদস্যগণ কোনো ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হলে অথবা আদালত কর্তৃক সেই অভিযোগ গৃহীত হলে সেই চেয়ারম্যান বা সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করা সরাসরি নির্দেশনা রয়েছে। এ ঘটনায় উল্লেখিত আইনের ব্যক্তয় ঘটেছে।

এসব বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বলেন, ‘অফিসিয়ালি এ বিষয়ে আমার এখনও পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই। যদি অ্যারেস্ট করে তাহলে এ বিষয়টি আমরা সরকারকে জানাবো। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে’।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ আগস্ট ভুক্তভোগী কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে গাজীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি ধর্ষণ মামলা ২২৭/২২ দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত জেলা পিবিআই কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন উপজেলার রাউৎকোনা গ্রামের মৃত সাহেব আলী মোক্তারের ছেলে ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি।

ভুক্তভোগীর করা মামলার বর্ণনায় বলা হয়, চেয়ারম্যান তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে ওই গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করতেন। এক পর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়লে দুই মাস আগে তাকে বাড়ির এক কাজের ছেলের সাথে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়।

পরে গত ১৬ আগস্ট কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সে কন্যা সন্তান প্রসব করে। এরপর তার স্বামী তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান।

এ ঘটনা জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে কিশোরীর স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

পরে চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী দিয়ে কিশোরীকে সন্তানসহ অপহরণ করে তার শ্যালক আল-মামুনের বাড়িতে আটকে রাখেন। এরপর তাকে আদালতের নির্দেশে নবজাতকসহ ভুক্তভোগী পরিবারকে নিরাপত্তা প্রদান করা হয়।

Advertisements