ইউএনও উপর হামলা করেছে তারই সাবেক মালী, পুলিশের দাবি
Advertisements

বাংলাদেশের দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর তারই সাবেক মালি হামলা চালিয়েছিল বলে পুলিশ দাবি করেছে।

শনিবার একটি সংবাদ সম্মেলনে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, ওই হামলায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন কর্মচারী রবিউল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার দেয়া তথ্যে হামলায় হাতুড়ি পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে তাকে মিলিয়ে দেখা হয়েছে।

এই ঘটনায় বাড়ির নৈশ প্রহরী নাজিম হাসান পলাশকেও গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। যদিও রবিউল ইসলামকে রিমান্ডে নেয়া হলেও নাজিম হাসানের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়নি।

তদন্তধীন বিষয় বলে তিনি এর বেশি আর জানাতে চাননি।

পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রবিউল ইসলাম ইউএনও কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। তিনি মালি হিসাবে কাজ করতেন। তবে চারমাস আগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

র‍্যাব আর পুলিশের দুই রকমের তথ্য
এর আগে এই ঘটনায় স্থানীয় যুবলীগের একজন নেতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর র‍্যাব জানিয়েছিল, তারা চুরির উদ্দেশে ওই বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

সেই সময় র‍্যাব-১৩ অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদৌস বলেছিলেন, তাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে আসাদুল জানিয়েছেন, নবীরুল এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাওয়া ব্যক্তি নবীরুল বলেও সে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছিল যে, তারা মনে করেন, এটা কোন চুরির ঘটনা নয়।

“অ্যাসোসিয়েশন মনে করে এটি কোনও চুরির ঘটনা নয়। কারণ দুর্বৃত্তরা কোনও প্রকার জিনিস বা সম্পদ চুরি করেনি। এটি একটি পরিকল্পিত আক্রমণের ঘটনা এবং এর সঙ্গে আরও অনেক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন।” লিখিত বক্তব্যে বলেছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

পরে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘ইউএনওর বাসায় চুরির ঘটনা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। কী কারণে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে, তা আরও তদন্তের জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছি।’

এরপরেই ডিবি পুলিশ মামলাটির তদন্ত করতে শুরু করে।

এর কয়েকদিন পরেই ইউএনও কার্যালয়ের মালীকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানালো, এই কর্মচারীই ইউএনও-র ওপর হামলা চালিয়েছিল।

পুলিশ ও র‍্যাবের ভিন্ন তথ্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে র‍্যাব-১৩ অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদৌস বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”গ্রেপ্তারের পর তারা স্বত:প্রণোদিত হয়েই ওই স্বীকারোক্তি দিয়েছিল। সেটা তাদের বক্তব্য ছিল।”

“তখনো আমরা বলেছি, প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য আরও সময় দিতে হবে, তদন্ত করতে হবে। এখন পুলিশ তদন্ত করে যা পেয়েছে, সেটাই ঠিক।”

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না। আসাদুল এটি কেন বলেছে…হয়তো তাকে মিসগাইড করেছে, বা অন্য কোন ইয়ে থাকতে পারে, সব বিষয়গুলো কিন্তু আমরা দেখছি তদন্ত করে।”

সূত্রঃবিবিসি

Advertisements