আফগানিস্তানে আমেরিকাকে সঙ্গ দিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পাকিস্তান
Advertisements

আমেরিকার সঙ্গে পাকিস্তানের গত দুই দশকের সম্পর্ককে ‘ভয়াবহ ও বিপর্যয়কর’ আখ্যায়িত করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, আমেরিকার মিত্র হওয়া সত্ত্বেও অসংখ্যবার ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে পাকিস্তান এবং একই সময়ে আফগানিস্তানে আমেরিকাকে সঙ্গ দিতে গিয়েও আমরা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিঙ্কেন পাকিস্তানের সঙ্গে তার দেশের সম্পর্ককে পুনর্মূল্যায়ন করা হবে বলে ঘোষণা করার পর এ অভিযোগ উত্থাপন করলেন ইমরান খান। ব্লিঙ্কেন মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিকে বলেন, আফগানিস্তানে পাকিস্তানের এমন অনেক স্বার্থ রয়েছে যা মার্কিন স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।এ বিষয়টি এই দুই পুরনো মিত্রের মধ্যে আস্থাহীনতার পরিবেশকে চাঙ্গা করেছে।

এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গতরাতে (বুধবার রাতে) সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ব্লিঙ্কেনের বক্তব্যকে তার অজ্ঞতা থেকে উৎসারিত বলে মন্তব্য করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ইমরান খান বলেন, “এমন অজ্ঞ ও মূর্খ বক্তব্য আমি আমার জীবনে শুনিনি।”

পাকিস্তানে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রদান ও দেশটিকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করারর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইমরান খান বলেন, পাক-আফগান সীমান্ত জুড়ে গত ২০ বছর যাবত আমেরিকার কঠোরতম ড্রোন নজরদারি বজায় ছিল; কাজেই তারাই ভালো করে জানে, পাকিস্তানে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য আছে নাকি নেই।

চলতি শতাব্দির গোড়ার দিকে পাকিস্তানের সাবেক সেনা শাসক পারভেজ মুশাররফ আমেরিকার কথিত সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে তার দেশকে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধী রাজনীতিবিদ হিসেবে শুরু থেকেই ওই যুদ্ধে পাকিস্তানের অংশগ্রহণের ঘোর বিরোধিতা করে এসেছিলেন ইমরান খান। তিনি সিএনএনকে আরো বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে মিত্র দেশ হিসেবে আমেরিকা যে আচরণ করেছে তা অত্যন্ত অন্যায়।মিত্র হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকা পাকিস্তানে ৪৮০টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এছাড়া, আফগানিস্তানে আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের কারণে পাকিস্তানের ৮০ হাজার সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে।

সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমেরিকাকে বহুবার এই বলে সতর্ক করা হয়েছিল যে, তারা সামরিক উপায়ে আফগান সংকটের সমাধান করতে পারবে না। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে বাইরে থেকে চাপিয়ে দেয়া কোনো সরকারকে দেশটির জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করা যাবে না। কাজেই তালেবানকে নিয়ন্ত্রণ করার চিন্তা বাদ দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ইমরান খান বলেন, মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত তালেবানকে সময়ে দেয়া। কিন্তু যদি এখন দেশটিকে সহযোগিতা করা না হয় তাহলে আফগানিস্তানে আবার বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগ দেখা দেবে।

পার্সটুডে

Advertisements