পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) ভাষণে সারাবিশ্বে কোভিড ভ্যাকসিন বিতরণে সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা ইস্যু অধিক গুরুত্বের সাথে তুলে ধরবেন।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ওপর আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বছর জাতিসঙ্ঘ সাধারন পরিষদের অধিবেশনে কোভিড ভ্যাকসিন বিতরনে বৈষম্য দূর করার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব সহ আলোচনা করা হবে।
ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারন পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামীকাল সকালে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। তিনি ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে যাত্রা বিরতি করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছবেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষন দিবেন।
জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতি থেকে পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার প্রত্যাশার মাধ্যমে সহিষ্ণুতা গড়ে তোলা, পৃথিবীর প্রয়োজনে সাড়া দিতে টেকসই পদক্ষেপ নেয়া, জনগণের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো এবং জাতিসংঘকে পুনরায় শক্তিশালী করা’।
ড. মোমেন বলেন, এ বছরে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আলোচনাকালে কোভিড পরিস্থিতি, টেকসই উপায়ে পরিস্থিতির অবসান ঘটানো ও পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব পাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী অধিবেশনে কোন রকম বৈষম্য ছাড়াই কোভিড ভ্যাকসিনকে একটি গণপন্য হিসাবে বিচেনার জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করবেন। তিনি আরো বলেন, কোভিড ইস্যু নিয়ে আলোচনা ছাড়াও কপ২৬ অনুষ্ঠানের আগে জাতিসঙ্ঘ অধিবেশনে জলবায়ু ইস্যু নিয়েও আলোচনা করা হবে যা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, ঢাকা বর্তমানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) চেয়ার।
ড. মোমেন বলেন, আমরা বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম রাখতে এবং অভিযোজন ও অভিবাসনের জন্য আরো অর্থায়ন চাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘ অধিবেশন চলাকালে পৃথক অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার আয়োজন করবে। কয়েকটি দেশ এ আলোচনায় যোগ দিবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ও বারবাডোসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন।
ড. মোমেন আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ি সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি এই বৈঠকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে মার্কিন ব্যবসায়িদের প্রতি আহবান জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী এ সফরকালে ভার্চ্যুয়ালি একটি প্রেসব্রিফিং এবং কমিউনিটি সমাবেশে বক্তব্য রাখাবেন।
প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে তার সরকারি সফর শেষে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আগে ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি সফর করবেন। গত বছরের মার্চ মাসে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম বিদেশ সফর। ফিনল্যান্ডে যাত্রা বিরতির পর আগামী ১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস