পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি আগে থেকে খারাপ ছিল এবং আমেরিকা যথাযথ অর্থেই এই পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে রেখে গেছে। তিনি বুধবার মার্কিন নিউজ চ্যানেল পিবিএস’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই খোলামেলা মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, তালেবানের সঙ্গে তখন আলোচনা করতে হতো যখন আফগানিস্তানে ন্যাটো জোটের দেড় লাখ সেনা মোতায়েন ছিল। ইমরান খান বলেন, এখন যখন ১০ হাজারেরও কম সেনা রয়েছে এবং তাদেরও চলে যাওয়ার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে তখন তালেবানকে রাজনৈতিক সমঝোতায় বাধ্য করা দুরূহ ব্যাপার; কারণ, তালেবান এ যুদ্ধে নিজেদেরকে বিজয়ী ভাবছে।
দুই সপ্তাহ আগে আফগান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ আশরাফ গনি অভিযোগ করেছিলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান থেকে প্রায় ১০ হাজার জঙ্গি আফগানিস্তানে প্রবেশ করেছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানে প্রায় ৩০ লাখ আফগান নাগরিক বসবাস করে যাদের অনেকেই তালেবানের জাতিগোষ্ঠীর লোক; বিশেষ করে পশতুন জনগোষ্ঠী।আফগানরা পাকিস্তানের যেসব ক্যাম্পে বসবাস করে সেগুলোতে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ পর্যন্ত মানুষের বসবাস। পাকিস্তানের পক্ষে কীভাবে তাদের খোঁজখবর রাখা সম্ভব?
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আফগান সংকট সমাধানের একমাত্র উপায়ে দেশটির সরকারের সঙ্গে তালেবানের একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় উপনীত হওয়া। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে যুদ্ধ চলতে থাকলে পাকিস্তানকে দু’টি বিষয়ের মোকাবিলা করতে হবে। এক, আবার পাকিস্তানে আফগান শরণার্থীদের ঢল নামবে কিন্তু সেরকম পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পাকিস্তানের নেই। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, পাকিস্তানে আফগানিস্তানের চেয়ে বেশি পশতুন বসবাস করে। যুদ্ধ চলতে থাকলে পাকিস্তানি পশতুনরা বসে থাকবে না বরং তাদের এ যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আফগান সরকার অভিযোগ করছে যে, দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তালেবানকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে পাকিস্তান; কিন্তু এই অভিযোগ কঠোর ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামাবাদ।
পার্সটুডে