আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ আশরাফ গনি বলেছেন, তার দেশের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ‘জরুরি ও কার্যকর’ একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তার সরকার। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আফগানিস্তানের যুদ্ধ পরিস্থিতি বদলে যাবে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
প্রেসিডেন্ট গনি পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এক ভাষণে একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তার ব্যক্তিগত নজরদারিতে এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার আফগানিস্তানে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয় এবং ঈদের দিন সকালে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ লক্ষ্য করে তিনটি রকেট নিক্ষেপ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এর পরপরই নিজের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন আশরাফ গনি।
তিনি বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে রাজনৈতিক উপায়ে আফগান সংকটের সমাধান করা সম্ভব হবে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তালেবান আকস্মিক অভিযান চালিয়ে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নেয়। এর জের ধরে সারাদেশে স্থানীয় কিছু জনগোষ্ঠী অস্ত্র হাতে নিয়ে সরকারি সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে। প্রেসিডেন্ট গনি ‘গণবাহিনী’ নামে পরিচিত এসব সশস্ত্র ব্যক্তিকে নিরাপত্তা বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করেন।
আফগান প্রেসিডেন্ট তালেবানের অব্যাহত অগ্রাভিযান ও কোনো কোনো অঞ্চল থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর পশ্চাদপসরণ সম্পর্কে বলেন, এসব প্রচারণা যুদ্ধের অংশ। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীতে লোক ভর্তির সময় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সৈন্যদের পালানোর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সামরিক কাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
আশরাফ গনি বলেন, শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যেসব তালেবানকে জেলখানা থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে তারাই আবার অস্ত্র হাতে নিয়েছে এবং তারাই যুদ্ধের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে। তিনি সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের সঙ্গে আফগান সরকারের শান্তি আলোচনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই আলোচনায় তালেবান নিজেদের এই অবস্থান স্পষ্ট করেছে যে, তারা শান্তি চায় না বরং বলপূর্বক দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করতে চায়। প্রেসিডেন্ট গনি অভিযোগ করেন, এখনো ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর’ সঙ্গে তালেবানের যোগাযোগ রয়েছে এবং তারা পাকিস্তানের যোগসাজশে আফগানিস্তানকে ধ্বংস করতে চায়।#
পার্সটুডে