করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের মতো এবারও বৈশাখি এবং ঈদ মৌসুমে ব্যাবসায়িক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি। বৈশাখের আগে কয়েক দিন মার্কেট খোলা থাকলেও আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।
এদিকে সামনে ঈদ। এই ঈদ কেন্দ্র করেই ফ্যাশন খাতের সারা বছরের আয়-ব্যয়ের একটি বড় অংশ নির্ধারণ হয়ে থাকে। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আসন্ন ঈদ মৌসুমেও বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন দেশীয় ফ্যাশন হাউস মালিকরা।
এ প্রসঙ্গে,ফ্যাশন হাউস নিত্য উপহার-এর স্বত্বাধিকারী বাহার রহমান রেডিও তেহরানকে জানান,তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। দোকান কর্মচারী, কাপড় বোনা শ্রমিক,পাইকার,সরবারহকারি-এই গোটা চেইন আক্রান্ত হয়ে গেছে করোনার কারণে। এ অবস্থায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।
শিল্পোদ্যোক্তা ও ফ্যাশন হাউস’কে -ক্রাফট ‘এর স্বত্বাধিকারী খালিদ মাহমুদ খান বলেন,‘বর্ষবরণ ও ঈদ উপলক্ষে আমাদের ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও এবারও আমরা কোভিডের কারণে বিপাকে পড়েছি। লকডাউনের কারণে বৈশাখের বেচাকেনা সেভাবে হয়নি। উপরন্তু ঈদের বেচাবিক্রি নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও অনলাইনে কিছু বিক্রি বেড়েছে; কিন্তু সার্বিক চিত্র আশাব্যঞ্জক নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলা করা উদ্যোক্তাদের জন্য অসহনীয় হয়ে পড়বে।’
অনলাইন কেনাকাটার সুযোগ বেড়েছে
করোনাকালে ই-কমার্সের সুযোগ নিয়ে ব্যাবসা করছেন প্রায় সাড়ে চার লাখ অনলাইনভিত্তিক উদ্যোক্তা। গত বছর যখন সব কিছু বন্ধ এবং ব্যবসায়ীরা বিপর্যস্ত সে সময়ে অনেক ফ্যাশন উদ্যোক্তা ফেসবুক পেজ এর মাধ্যমে বিপুল সাড়া পেয়েছিলেন। ফেসবুক রিপোর্ট অনুসারে জানা যায়, ২০১৯ সালে প্রায় ৫০ হাজারের মতো পেজ ছিল উদ্যোক্তাদের। ২০২০ সালে করোনাকালে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে চার লাখ। এর বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই স্বল্প পূঁজিতে ব্যবসা শুরু করেছিলেন ।
এবার বৈশাখ ও ঈদকে সামনে রেখে উদ্যোক্তাদের অবস্থা সম্পর্কে উইম্যান অ্যান্ড ই-কমার্স প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা বলেছেন,‘গত বছর তো হঠাৎ করেই আমরা করোনার কবলে পড়েছিলাম। তারপরও সাফল্যের দৃষ্টান্ত রেখেছিলেন আমাদের উদ্যোক্তারা। এবার যেহেতু আমরা জেনে গেছি,তাই প্রস্তুতিও সেভাবে নিয়েছি। আমার জানামতে,বৈশাখে উদ্যোক্তারা মোটামুটি সাড়া পেয়েছেন। ঈদে আরও ভালো সাড়া পাবেন বলে আশা রাখি।
এরই মধ্যে সরকার মহিলা উদ্যোক্তাদের ১০০ জনকে জয়িতা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় খুব স্বল্প সুদে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেবার কথা ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী উই ডেলিভারি সিস্টেমও ঘোষণা করেছেন। উদ্যোক্তারা এ সুযোগ নিয়ে বিদেশে এবং দেশের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত তাদের পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন।#
পার্সটুডে