ভারতের জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লির মূলকেন্দ্র ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নয়াদিল্লির রাজপথে আয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর মার্চিং ব্যান্ড জনপ্রিয় ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি’ গানের সঙ্গে কুচকাওয়াজে অংশ নেয়।
পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর স্মরণে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের প্রথম ১০ সারিতে ছিলেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১২২ সদস্য।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহতাশিম হায়দার চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন বাহিনীর কন্টিনজেন্টের প্রথম ছয় সারিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পরের দুই সারিতে নৌবাহিনী ও শেষের দুই সারিতে বিমানবাহিনী ছিল।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে মুক্ত করা কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারিত্ব বহন করবে বাংলাদেশ কন্টিনজেন্ট।’
ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ভিক্রান্তের মডেল এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পরিচালিত সমুদ্র অভিযানের চিত্র কুচকাওয়াজে তুলে ধরে ভারতীয় নৌবাহিনী।
আজ প্রথমবারের মতো ভারতীয় বিমানবাহিনীর একজন নারী যুদ্ধবিমান পাইলট হিসেবে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ভাবনা কান্ত জঙ্গিবিমান নিয়ে ফ্লাইপাস্টে অংশগ্রহণ করে ইতিহাসে নাম লেখান।
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আজ সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেন, ‘ভারতের সব জনগণকে জানাই প্রজাতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা। জয় হিন্দ!’
দেশ পরিচালনায় ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারত শাসন আইন ১৯৩৫-এর জায়গায় ভারতে কার্যকর হয় নতুন সংবিধান এবং দেশটি আবির্ভূত হয় প্রজাতন্ত্র হিসেবে। তখন থেকে এ দিনটি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এ বছর কোভিড মহামারির কারণে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুচকাওয়াজের দৈর্ঘ্য ৮.২ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৩.৩ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা হয়। সেই সাথে দর্শক সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার থেকে করা হয় ২৫ হাজার।
পাশাপাশি, গত পাঁচ দশকের মধ্যে এবার প্রথমবারের মতো ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে কোনো বিদেশি নেতা উপস্থিত ছিলেন না।
ভারত এ বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু তিনি নিজ দেশে কোভিড প্রাদুর্ভাবের কারণে সফর বাতিল করে দেন।
ভারত সর্বশেষ কোনো বিদেশী নেতাকে আমন্ত্রণ জানায়নি ১৯৬৬ সালে। সেইবার প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী মারা যান এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের দুই দিন আগে ২৪ জানুয়ারি ইন্দিরা গান্ধি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।