প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করা পুঁজিবাদী চিন্তা৷ বউকে আলাদাভাবে পালার চিন্তা বা জামাই দ্বারা বউয়ের আলাদাভাবে পালিত হবার চিন্তাও স্রেফ পুঁজিবাদী৷
সংসারে, ঘরে, পরিবারে কেউ খেতে পড়তেই আসে না, আসে জীবনের তাগিদে, যৌনতার তাগিদে, সুখ সন্তান পূর্ণতার তাগিদে৷
যৌনতাকে খ্রিস্ট ধর্মে অশুচি ভাবা হয়, সনাতন ধর্মেও সংকোচ করা হয়, আবার ইদানিং কালে বহু উন্নত দেশে নারীপুরুষের যৌন সম্পর্ককেই শুধুমাত্র গুরুত্ব দেয়া হয়, সন্তান জন্মদান লালন পালনের ক্ষেত্রে আগ্রহ একেবারে কম৷
অধিকাংশ ধর্মে সংসারকর্মকে স্বর্গসেবার জন্য জঞ্জাল ভাবা হয়৷ খ্রিস্টান হিন্দু বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মধ্যে এগুলো লক্ষ্য করা যায়৷ গ্রিক এবং পাশ্চাত্যের অনেক মনীষী মত প্রকাশ করেন, সন্তান জন্মদান ব্যতীত যৌনকর্মের অন্য কোন উদ্দেশ্য খুবই গর্হিত, যেন না পারতে সঙ্গ লাভ! যৌনসুখ মহাপাপ !
বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলামের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। ইসলাম বিয়েকে স্পিরিচুয়ালিটির অংশ মনে করে, সন্ন্যাসব্রতকে ইসলাম নাকচ করে; ইসলাম বিবাহিত নারীপুরুষের যৌন চাহিদাকে বায়োলজিক্যাল নিড হিসেবে শুধু মেনেই নেয় না এটাকে বৈধ সুখও মনে করে, পবিত্র মনে করে, সন্তান জন্মদানকে প্রবলভাবে উৎসাহিত করে, সন্তান লালন পালনকে পূণ্যের কাজ মনে করে; স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ককে পরষ্পরের জন্য প্রশান্তিদায়ক হিসেবে পুনঃ পুনঃ ঘোষণা করে ৷
ইসলাম বিয়ের ক্ষেত্রে বৈচিত্রকেও নাকচ করে না, পছন্দের স্বাধীনতা এখানে ব্যাপক, চিরস্থায়ী সম্পর্কের নামে সতাতন ধর্ম- খ্রিস্টান ধর্মের মতো স্বামীকে স্ত্রীর উপর স্ত্রীকে স্বামীর উপর চাপিয়ে দেয় নি । ইসলাম প্রয়োজনে বহু বিবাহের পথকেও উন্মুক্ত রেখেছে, বিধবা বিবাহকে সহজ করেছে।
ইসলামের বিয়ে একাধারে একটি চুক্তি, একটি প্রতিষ্ঠান; মানব সভ্যতার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটকে ইসলাম পুরোপুরি আমলে আনে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা এবং বংশধারা থেকে বিয়েকে আলাদা করে না । জীবনের সাথে বিয়ে শতভাগ ইনক্লুসিভ।
এখন যা হয় ; বিয়ের নামে ছেলে নিজেকে পণ্য মূল্য রুপে হাজির করে, মেয়েকে পণ্য হিসেবে হাজির করানো হয়, অথবা ছেলে পণ্য হিসেবে হাজির হয়৷ লক্ষ টাকার কারবার, খরচের চাপে ভয়ে ছেলেমেয়েরা বিয়ে করতে নারাজ৷ এক মহল্লা মানুষ খাওয়ানো, বিশাল হাটবাজার অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঋণের বোঝা বাড়ায়৷
এর ফলাফল দাঁড়ায়, নিজের গুণাগুণের তুলনায় ছেলেটি যথেষ্ট সেক্সি নয়, পণ্যমূল্যের তুলনায় মেয়েটি যথেষ্ট হট নয়৷ হিসেব মেলে না, তীব্র অসন্তুষ দেখা দেয়৷ ছেলের কাড়ি কাড়ি টাকা নেই! মেয়ের বাবার সম্পত্তি এতো অল্প! এই পুঁজিবাদী চিন্তা থেকে আমাদের বের হিয়ে আসতে হবে। বিয়ে করতে কাড়ি কাড়ি টাকা লাগে না৷
বিয়ে করতে লাগে খোদাভীতি, শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি, প্রয়োজন পরিমান মতো আর্থিক সামর্থ্য ৷
প্রেমের বয়সেই বিয়ে করুন। বিবাহ জিন্দাবাদ।
লেখকঃ আইনজীবী, সম্পাদক , ভাওয়াল বার্তা ।