প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধ
Advertisements

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের ভূমি উন্নয়ন কাজ ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন।

আজ (রোববার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মেট্রোরেলের প্রথম অংশের (উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত) নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি। পরে দেশ ও জাতির উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যোগাযোগব্যবস্থাকে উন্নত করতে সরকার কাজ করছে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাতাদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রকল্পে মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত করা হচ্ছে। আমি অনুরোধ করব- এটা যেন ফার্মগেট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ফার্মগেট একটি জংশন পয়েন্ট। সেখান থেকে সারা ঢাকা যোগাযোগ করা যায়। মেট্রোরেল সেখানে গেলে আরও বেশি মানুষ উপকার পাবে। মেট্রোরেলেরও ভালো পয়সা কামাই হবে।’

মেট্রোরেল প্রকল্পের সুবিধা-খরচসহ বিস্তারিত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন থাকবে। সব ইলেকট্রনিক সিস্টেম হবে। ট্রেনে ওঠানামা দ্রুত হবে। কারও জন্য অপেক্ষা করা যাবে না।

তিনি বলেন, ঢাকায় অতিরিক্ত মানুষের বসবাস। কিন্তু রাস্তাঘাটের অভাব। আবার গাড়িও ব্যবহার হচ্ছে বেশি। এজন্য সাধারণ মানুষ যারা বাসে চড়েন, তাদের জন্য ঢাকা শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত আরও সহজ করা আমাদের লক্ষ্য। সেজন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছি। ঢাকাকে কেন্দ্র করে বৃত্ত‍াকারে সড়ক, নৌপথ ও রেলপথ নির্মাণ করে যোগাযোগ আরও সুন্দর করার উদ্যোগ নিয়েছি। পুরো ঢাকা ঘিরে সব পথই থাকবে। সে ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই হয়ে গেছে। কাজও শুরু হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পুরো ঢাকাকে বাস ও রেলপথের অধীনে আনতে চাই। এজন্য এমআরটি সঙ্গে বিআরটি নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। এমআরটি উত্তরা থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পর্যন্ত যাবে। এতে ৬০ হাজার যাত্রী উত্তরা থেকে মতিঝিল মাত্র ৩৮ মিনিটে যেতে পারবে। অর্থের সাশ্রয়ের পাশাপাশি সময়ও কম লাগবে।

দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মিত হচ্ছে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ প্রকল্পের আওতায়। আর বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে গাজীপুর বাস ডিপো।

বাস্তবায়নাধীন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এ মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য হবে ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। এটি উত্তরা থেকে শুরু হয়ে পল্লবী-রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ী-ফার্মগেট-হোটেল সোনারগাঁও-শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর-তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত যাবে। মেট্রোরেল চালু হলে ঘণ্টায় উভয়দিক থেকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। আর বাস্তবায়নাধীন বিআরটিএ লাইন দিয়ে গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট সড়কে ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে।

২০১৩ সালের ১ নভেম্বর মেট্রোরেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ১১ জুলাই ডিপোর ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তবে ২০২০ সালে মধ্যেই আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। মেট্রোরেলের মূল স্থাপনার প্রাথমিক নকশার কাজ শেষ হয়েছে ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর।

Advertisements