গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের পেলাইদ গ্রামে বাড়ির সীমানাকে কেন্দ্র করে মারামারিতে উভয় পক্ষের মধ্যে দুইজন আহত ও এক নারীর শ্লীলতাহানি করেছে প্রতিপক্ষরা।
এ ঘটনায় শ্রীপুর মডেল থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছে উভয় পক্ষ।
ভুক্তভোগী কিছুদিন আগে নিজের বাড়ির কাজ শুরু করেন। তিনি পেলাইদ গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিনের সন্তান ছালেহ আহাম্মদ (৬০)। তিনি যে বাড়ির কাজ শুরু করেছেন ওই বাড়ির টিনের পানির জন্য দুই ফুট জায়গা রেখেই কাজ করছিলেন। পরে অভিযুক্তরা বাড়ি করতে নিষেধ করে, এরপর বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়, মারামারির এক পর্যায়ে অভিযুক্ত ফারুক কর্তৃক শ্লীলতাহানির শিকার হয় এক নারী।
বাড়ির কাজ অর্ধেক হওয়ার পরই বাঁধা দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় ছালেহ আহাম্মদ বাদী হয়ে চারজনকে অভিযুক্ত করে শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই অভিযোগে অভিযুক্তরা হলেন, মৃত সাফিজ উদ্দিনের সন্তান ফারুক (৪০), রতন (৩৬), রতনের স্ত্রী ফাতেমা (৩০) ও তাদের মা আছিয়া খাতুন (৫২)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, [১৩ নভেম্বর ২০২০] সকাল নয়টায় অভিযুক্তরা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের বাড়ি নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়। এই বাঁধা দেওয়ার প্রতিবাদ করে ছালেহ আহাম্মদের স্ত্রী হাফিজা খাতুন। পরে অভিযুক্তরা হাফিজাকে বেধড়ক মারধর করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। হাফিজা বর্তমানে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওই মারামারিতে অভিযুক্তদের মধ্য থেকে একজন কিছুটা আহত হয়।
মারামারির পরপরই এক পর্যায়ে জনসম্মুখে এক মধ্যবয়সী নারীর পরনের কাপড় টেনে ছিড়ে ফেলে অভিযুক্ত ফারুক। শ্লীলতাহানির শিকার ওই নারী একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী করে। তাকে রাস্তায় আসা যাওয়ার পথে দীর্ঘদিন যাবত কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে ফারুক। শুধু তাই নয়, কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তার মুখে এসিড মেরে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে সে। এ ঘটনা এলাকার মেম্বারসহ স্থানীয় গণমান্যদের ইতিপূর্বে জানিয়েছিলেন ওই নারী। তবুও তিনি কোনও সুরাহা পাননি। ওই মারামারি সময় সুযোগ পেয়ে পড়নের কাপড় টেনে ছিড়ে ফেলে দেয় ফারুক। এ ঘটনার সম্পর্কে প্রতক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গোসিঙ্গা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার মনির হোসেন জানিয়েছেন, আমি শুনেছি রাস্তায় আসা যাওয়ার তাকে উত্যক্ত করতো। এ ব্যাপারে আমাকে ওই নারী এর আগেও জানিয়েছিল। নারী সংক্রান্ত বিষয়ে সালিশ করার ব্যাপারে মেম্বার চেয়ারম্যানদের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমি তাকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বলছিলাম। আর বাড়ি করা নিয়ে যে মারামারি হয়েছে, এটক আগেই মীমাংসা হয়ে গিয়েছিল, কেন যে মারামারি হলো সেটাই বুঝতে পারছি না।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায় এসআই হুমায়ুন জানিয়েছেন, ঘর উঠানো নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এটা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কথা বলেছে উভয় পক্ষ। শ্লীলতাহানির অভিযোগও পাওয়া গেছে। আমি গভীরভাবে তদন্ত করে দেখবো, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শ্রীপুর প্রতিনিধি/ মোজাহিদ