গাজীপুরের শ্রীপুরে ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে জেলা ও পৌর যুবদলের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে শোডাউনের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে পৌরসভার গিলারচালা এলাকার প্যারামাউন্ট কারখানার সামনে এ উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, প্যারামাউন্ট কারখানা থেকে ঝুট বের করার খবর পেয়ে শ্রীপুর পৌর যুবদলের সদস্য সচিব আবু তাহের প্রধান তার অনুসারীদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন এবং ঝুট বের করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। এর পরপরই জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনোয়ার বেপারীর অনুসারীরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পাল্টা শোডাউন দেন।
উভয় পক্ষের শোডাউনের ফলে এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, “মালিকপক্ষ এদিন কারখানা থেকে কোনো মালামাল বের করেনি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখতে পেয়েছে।”
জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনোয়ার বেপারী দাবি করেন, বিএনপি নেতা ডাঃ এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর নির্দেশে মালিকপক্ষ তাকে ঝুট ব্যবসার ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না এবং আমার কোনো লোকজন শোডাউনে অংশ নেয়নি।”
অন্যদিকে, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব আবু তাহের প্রধান অভিযোগ করেন, “আনোয়ার বেপারীর নামে কমপক্ষে ২০টি কারখানার ঝুট ব্যবসা রয়েছে। তিনি মালিকপক্ষের সাথে সমন্বয় না করেই ঝুট বের করার চেষ্টা করছেন, যা অনৈতিক। এ কারণেই আমি এবং আমার লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানাই।”
গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লা বলেন, “ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। দল এমন কোনো কাজকে সমর্থন করে না। যদি কেউ অভিযোগ দায়ের করে, দল এ বিষয়ে তদন্ত করবে।”
এলাকার রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিরা মনে করছেন, ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে যুবদলের কিছু নেতাকর্মী স্বার্থসিদ্ধির রাজনীতিতে লিপ্ত হচ্ছেন। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তারা মনে করেন, দলীয় নেতাকর্মীদের এমন কার্যকলাপ দলীয় শৃঙ্খলা এবং জনসমর্থনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এ শোডাউনের ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দলীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা দলের সুনাম রক্ষায় সহায়ক হবে।
