ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, কারও মধ্যে ঈশ্বর রয়েছে কি না, তা জনতাই বিচার করে। নিজেকে কখনো ঈশ্বর ঘোষণা করা যায় না।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) মহারাষ্ট্রের পুনেতে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করে মোহন ভাগবত বলেন, ‘কেউ ঈশ্বরতুল্য কি না, মানুষই তা ঠিক করে। আমাদের এ কথা বলা ঠিক নয় যে আমি ভগবান হয়ে গেছি।’
সংঘপ্রধান কেন ভগবানের কথা তুললেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেকে ঈশ্বরতুল্য দাবি করেছিলেন। তার জন্ম যে ‘অজৈবিক উপায়ে’, তা জানিয়ে বলেছিলেন, মায়ের মৃত্যুর পর তার মনে হতো জৈবিকভাবে তার জন্ম হয়নি। পরমাত্মা তাকে পাঠিয়েছেন। ঈশ্বর তাকে পাঠিয়েছেন বিশেষ বিশেষ কাজ করিয়ে নিতে। ঈশ্বরের সঙ্গে তার সেই যোগাযোগ সরাসরি। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঈশ্বর তাকে ডেকে নেবেন না।’
মোহন ভাগবতের কটাক্ষের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী মোদি কি না, সেই জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে মোদিকে তিনি কোনো বার্তা দিতে চাইলেন কি না।
লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিজেপি-আরএসএসের দূরত্ব আলোচনার মধ্যে উঠে এসেছিল। ভোটে বিজেপি প্রার্থীদের সাহায্যে সংঘকর্মীদের সেভাবে এগিয়ে না আসা নিয়েও আলোচনা হচ্ছিল। সেই রাজনৈতিক জল্পনা জোরালো হয়েছিল ভোট চলাকালে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার মন্তব্যে। নাড্ডা বলেছিলেন, বিজেপি এখন সক্ষম। নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। ভোটে জিততে বিজেপির এখন আর তাই সংঘের হাত ধরার প্রয়োজন নেই।
ভোটের ফলে বোঝা গিয়েছিল, সংঘের সাহায্য সেভাবে না পাওয়ায় বিজেপির কতটা লোকসান হয়েছিল।
আরএসএসের প্রচার বিভাগের প্রধান সুনীল আম্বেকর গত সোমবার কেরালায় এক অনুষ্ঠানে সেই মতপার্থক্যের কথা স্বীকার করে বলেছিলেন, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এমন হয়েই থাকে। মতপার্থক্য হলে আলোচনার মধ্য দিয়েই তা মেটানো হবে।
আম্বেকরের ওই মন্তব্যের কয়েক দিনের মধ্যেই সংঘপ্রধানের এই মন্তব্য বিজেপির প্রতি আরও এক সতর্কবাণী বলে মনে করা হচ্ছে।