বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার করেছে পুলিশ— এমন অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সহিংসতার তিনটি ভিডিও বিশ্লেষণ করে এ ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি বলেছে, আন্দোলন-সহিংসতার প্রেক্ষাপটে কারফিউ জারি এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এর মধ্যে যেসব ভিডিও এবং আলোকচিত্র পাওয়া যায়, সেগুলো যাচাই–বাছাই ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্ভূত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টি ও এর ক্রাইসিস অ্যাভিডেন্স ল্যাব বিক্ষোভ দমনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আইনবহির্ভূতভাবে প্রাণঘাতী ও কম প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের তিনটি ঘটনার ভিডিও যাচাই করেছে।
এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জ্যেষ্ঠ পরিচালক দেপোরসে মুচেনা বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসা ভিডিও এবং আলোকচিত্র অব্যাহতভাবে যাচাই করে ভয়াবহ চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সরকার ও এর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর প্রতি বিক্ষোভের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, সহিংস দমনাভিযান এবং যোগাযোগব্যবস্থার ওপর সব ধরনের বিধিনিষেধ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছে।
ঢাকার সাভার, বাড্ডা ও রামপুরা এলাকায় সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে ধারণ করা তিনটি ভিডিও যাচাই করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলেছে, সমাবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যথাযথ উপায় নয়। আগ্নেয়াস্ত্র শুধু তখনই ব্যবহার করা যাবে, যখন মৃত্যু ঘটতে পারে বা গুরুতর আহত হওয়ার মতো হুমকি মোকাবিলার প্রয়োজন হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেই সঙ্গে সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পুনর্বাসন করার দাবি করা হয়েছে।
এদিকে র্যাব দাবি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে সেটি সঠিক নয়। বিক্ষোভ দমনে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি র্যাব ।