ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং আমেরিকা তা হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া পর্যালোচনা করে দেখছেন। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম।
সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসেছেন আমেরিকার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস, ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থার মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নেয়া এবং কাতার ও মিশরের কর্মকর্তারা। বৈঠকে কাতার ও মিশর মধ্যস্থতা করছে।
প্যারিস বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে খবর বের হয়েছে যে, যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ইসমাইল হানিয়াসহ হামাসের ঊর্ধ্বতন নেতারা পর্যালোচনা করে দেখছেন। এর আগে হামাস বারবারই জোর দিয়ে বলেছে, গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ এবং গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত বন্দী বিনিময়ের ব্যাপারে তারা কোনো আলোচনা করবেন না।
হামাস মনে করে, যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইসরাইলি বন্ধুদের মুক্তি দিলে যুদ্ধবিরতির শেষে ইসরাইল আবার যুদ্ধ শুরু করবে। এখন যুদ্ধবন্দীদের ব্যবহার করে হামাস যে রাজনৈতিক ও সামরিক সুবিধা আদায় করতে পারে, বন্দিদের মুক্তি দিলে সেই সুযোগ তাদের হাতছাড়া হবে। ফলে হামাসকে অনেকটা ব্যাকফুটে চলে যেতে হবে। সে কারণে সংগঠনটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি নয় বরং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান চায়।
অন্যদিকে, ইসরাইল মনে করছে হামাসকে নির্মূল করা ছাড়াই যদি তারা যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি করে তাহলে ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরাইলের জনগণকে একথা বলতে পারবে না যে, তারা আমাকে ধ্বংস করেছে। বরং নেতানিয়াহু উল্টো প্রশ্নের মুখে পড়বে- হামাসকে যদি ধ্বংস করা সম্ভব নাই হয় তাহলে কেন এই দীর্ঘ যুদ্ধ চালানো হলো এবং এত লোকের প্রাণহানির কী প্রয়োজন ছিল।
এ অবস্থায় ইহুদিবাদী ইসরাইল উভয় সংকটে পড়েছে। সে ক্ষেত্রে ইসরাইলের যে চাওয়া, হামাসের চাওয়া প্রকৃতপক্ষে তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এমন অবস্থায় দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ চুক্তি হওয়া সত্যিই কঠিন এবং বিষয়টি অনিশ্চিতও বটে।