নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য লেখা সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ে নকল করার অভিযোগ স্বীকার করলেও দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও হাসিনা খান। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দায়মুক্তি নিতে চাচ্ছেন এই দুই লেখক।
সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করা করা হয়েছে। এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমে লেখালেখি হওয়ার পর ঘটনাটি সত্য বলে স্বীকার করে নিয়েছেন বইটির রচনা ও সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকা অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান।
তবে এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। সারা দেশে ২০২৩ সালে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তক ছাপা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটির ব্যাপারে একটি অভিযোগ তাঁদের নজরে এসেছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, এই বইয়ের কোনো কোনো অধ্যায়ের অংশবিশেষ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করা হয়েছে। বইয়ের এই নির্দিষ্ট অংশটুকু এবং ওয়েবসাইটটির একই লেখাটুকু তুলনা করে অভিযোগটি আমাদের কাছে সত্য বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।
নকল স্বীকার করলেও কৌশলে এর পুরো দায়ভার অন্য লেখকের কাঁধে চাপিয়েছেন জাফর-হাসিনা।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, একই পাঠ্যপুস্তক রচনার সঙ্গে অনেকে জড়িত থাকেন, যাঁদের শ্রম ও নিষ্ঠার ফলাফল হিসেবে বইটি প্রকাশিত হয়। বিশেষত জাতীয় পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্রে এই সব লেখকের কাছ থেকেই একধরনের দায়িত্বশীলতা আশা করা হয়। সেখানে কোনো একজন লেখকের লেখা নিয়ে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তা আমাদের টিমের জন্য হতাশার এবং মন খারাপের কারণ হয়। ওই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে আমরা দুজন না থাকলেও সম্পাদক হিসেবে এর দায় আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি। অবশ্যই পরবর্তী সংস্করণে বইটির প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করা হবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ বছর বইটির পরীক্ষামূলক সংস্করণ চালু হয়েছে এবং সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকে এতে যথেষ্ট পরিমার্জন ও সম্পাদনার সুযোগ রয়েছে। কাজেই উল্লিখিত অভিযোগের বাইরেও যেকোনো যৌক্তিক মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পাঠ্যবইয়ের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা হবে।
বইটি রচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ড. হাসিনা খান, ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, ড. মুশতাক ইবনে আয়ূব, রনি বসাক। আর সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
উল্লেখ্য, নতুন বছরের জন্য তৈরি করা পাঠ্য বই দেশের হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বাদ দিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে। কথিত ধর্মনিরপেক্ষতা শেখানোর নামে অনেক ক্ষেত্রেই ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে পাঠ্যপুস্তকে।