মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের পাশাপাশি জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের সর্বোচ্চ মূল্য-সীমা ৬০ ডলার বেঁধে দেয়ার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো।
শুক্রবার (গত পরশু) পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার এক ব্যারেল তেলের সর্বোচ্চ দামের সীমা ৬০ ডলার নির্ধারণ করে দিতে সম্মত হয়। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য রুশ অর্থনীতিকে আঘাত করা যাতে দেশটি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়ে যেতে না পারে।
এর প্রতিক্রিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্টের আবাসিক প্রাসাদ ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, “আমরা সর্বোচ্চ মূল্য-সীমা নির্ধারণের এই পদক্ষেপ মেনে নেব না।” মস্কো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এছাড়া, রুশ পার্লামেন্টের নিম্ন-কক্ষ দুমার পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কমিটির প্রধান লিওনিদ স্লাতস্কি বলেছেন, এ রকম করা হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের জ্বালানি নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জি-সেভেনবুক্ত দেশগুলোকে সতর্ক করে তিনি আরো বলেছেন, কোনো দেশ এই ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর করলে তার কাছে মস্কো তেল পাঠাবে না।
শিল্পোন্নত সাত দেশ ব্রিটেন, জার্মানি, ইতালি, কানাডা, আমেরিকা, ফ্রান্স জাপাান শুক্রবার ঘোষণা করে, তারা সোমবার (আগামীকাল) থেকে রুশ তেলের সর্বোচ্চ মূল্য-সীমা কার্যকর করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে অনেকে আশঙ্কা করছেন যে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত তেলের দাম আকাশচুম্বী করতে পারে, কারণ রাশিয়া বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ তেল সরবরাহ করে।
তেলের সর্বোচ্চ মূল্যসীমা প্রবর্তনের অর্থ হলো, অংশগ্রহণকারী দেশগুলো কেবলমাত্র সমুদ্রপথে পরিবহণ করা তেল এবং তেলজাত পণ্যগুলো কেনার অনুমতি পাবে, যা নির্ধারিত মূল্যে বা তার নীচে বিক্রি হবে। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শিপিং এবং বীমা সংস্থাগুলো জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলোতে অবস্থিত হওয়ার কারণে এই মূল্যসীমা লঙ্ঘন করে রাশিয়ার পক্ষে তার বেশি দামে তেল বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়বে।
তবে দৃশ্যত পশ্চিমা দেশগুলোর এ ধরনের পদক্ষেপ আগেভাগে আঁচ করতে পেরেছিল রাশিয়া। এ কারণে দেশটি এরইমধ্যে তার দুই বড় ক্রেতা ভারত ও চীনের কাছে অতিরিক্ত অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করার জন্য ১০০টিরও বেশি জাহাজের ব্যবস্থা করেছে।