বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সর্বোচ্চ ১২ বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২০ থেকে ২৫ বছর পেরিয়ে যাবার পর এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি। অনেকেই রাজধানীর বাইরে নামকাওয়াস্তে ক্যাম্পাস স্থাপন করে রাজধানীতেই তাদের মূল শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া, অবৈধভাবে একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়।
ইতোমধ্যে সাময়িক অনুমতির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এমন ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোপুরিভাবে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে তাদের নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
কমিশন থেকে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে হবে। আগামী ১ জানুয়ারি, ২০২৩ তারিখ থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া অন্য ক্যাম্পাসগুলো অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এ প্রসঙ্গে ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান রেডিও তেহরানকে বলেন, শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাসে চলে যেতে হবে। তবে অনেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সে শর্ত পালন করছে না। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তার পরে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন অনুযায়ী, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনে ন্যূনতম ১ একর এবং অন্যান্য এলাকায় ২ একর নিষ্কণ্টক, অখণ্ড ও দায়মুক্ত জমি থাকার কথা। কিন্তু অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করলেও তাদের আইনের শর্তানুযায়ী জমি নেই।
এ ছাড়া, স্থায়ী ক্যাম্পাসের জমি নিয়ে এখনো জটিলতায় রয়েছে ১০ বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হচ্ছে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগং, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা), দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া এবং উত্তরা ইউনিভার্সিটি।
বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউনিভার্সিটি যদি মানসম্মত হয় তাহলে যত দূরেই যাক না কেন তারা শিক্ষার্থী পাবে। তবে দেখতে হবে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক সক্ষমতা আছে কি না। কারণ ইউনিভার্সিটিগুলোর ঋণ নেওয়ারও সুযোগ নেই। তবে যেসব ইউনিভার্সিটির বয়স ২০-২৫ বছর হয়ে গেছে তাদের এতদিন চলে যাওয়া উচিত ছিল। দীর্ঘদিনেও যারা যায়নি আমি বলব, তাদের গাফিলতি, অদক্ষতা বা অন্য কোনো সমস্যা ছিল।’