ইরাক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ইরাক থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার কথা। নির্ধারিত সময়ের পরও যদি কোনো মার্কিন সেনা ইরাকে থাকে তাহলে সেটাকে বেআইনি উপস্থিতি হিসেবে ধরে নেয়া হবে। কারণ ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি ইরাকের পার্লামেন্টে সেদেশ থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাশ হয়।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমি গত বছর জুনে ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন। এ সময় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাগাদ ইরাক থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সমঝোতা হয়। সমঝোতায় এও বলা হয়েছিল সেনা প্রত্যাহার করা হলেও ইরাকি সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য কিছু সংখ্যক মার্কিন সামরিক উপদেষ্টা ইরাকে অবস্থান করবে। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের পরও ইরাকে আর কোনো মার্কিন সেনা উপস্থিতির আইনগত কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে না। এ কারণে যে কোনো মার্কিন সেনা উপস্থিতিকে দখলদার হিসেবে গণ্য করা হবে। তখন ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর জন্য যে কোনো পদক্ষেপ বৈধ বলে বিবেচিত হবে।
ইরাকের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেনা প্রত্যাহারের কথা থাকলেও সেদেশে অন্তত দুই হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন থাকবে। এ থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে মার্কিন সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কেননা ইরাকি সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য এতো বেশি সংখ্যক মার্কিন সেনা সেখানে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। ইরাক ছাড়াও প্রথম থেকেই সিরিয়ার মটিতেও মার্কিন সেনা উপস্থিতি ছিল বেআইনি। সিরিয়ার সরকার বহুবার সেদেশ থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে । এ কারণে সম্প্রতি ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের ওপর প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতরাতেও দক্ষিণ ইরাকের বাবুল আন্তর্জাতিক মহাসড়কে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের একটি কনভয়ের কাছেই বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এদিকে বিভিন্ন খবরে জানা গেছে ইরাক এবং সিরিয়ার কিছু এলাকায় দায়েশ বা আইএস জঙ্গিরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বলা যায় বাইরের সহযোগিতা বিশেষ করে মার্কিন সেনাদের সমর্থন নিয়েই এসব সন্ত্রাসীরা ফের সংগঠিত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে ইরাকে সেনা উপস্থিতির অজুহাত তৈরির জন্য আমেরিকা সন্ত্রসাসীদেরকে ব্যবহার করে ইরাকে নৈরাজ্য ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে।#
পার্সটুডে