কাশিমপুর কারাগারে হাজতির মৃত্যু
Advertisements

ডিসেম্বরের শুরুতে পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরুর পর কারাগারে বেড়েছে বন্দির সংখ্যা। গত ১০ দিনে ১৩ হাজার নতুন বন্দি কারাগারে গেছেন। কারাগারে এখন ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই অবস্থা। সাড়ে ৪২ হাজারের কিছু বেশি বন্দি ধারণক্ষমতার কারাগারগুলোতে এখন প্রায় দ্বিগুণ বন্দি রয়েছে। গত ১০ দিনে ঢাকাসহ সারা দেশের কারাগারে নতুন বন্দি এসেছে প্রায় ১৩ হাজার। দেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগারে এখন বন্দিতে ঠাসা। ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৬২৬ জন। কিন্তু, গতকাল পর্যন্ত কারাগারে বন্দি আছে ৮৩ হাজার ৬০৭ জন। গতকাল পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১১৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা অধিকাংশ দাগি আসামি। কেউ দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল।

এ ছাড়াও গত ১০ দিনে যে ১৩ হাজার নতুন বন্দি রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিরোধী দলের নেতাকর্মী। ১০ই ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ এবং দেশের বিভিন্ন বিভাগে বিএনপি’র বিভাগীয় কর্মসূচি পালন করার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। কারা অভ্যন্তরে বন্দিদের ঠাঁই না হওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছেন।
এ বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান মানবজমিনকে জানান, ‘কারাগারে বন্দি রয়েছে এখন ৮০ হাজার প্লাস। আমরা বন্দিদের সেবা দেয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’

গত ২৯শে নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ১লা ডিসেম্বর থেকে ১৫ই ডিসেম্বর মোট ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ অভিযানের নির্দেশনা দেয়া হয়। সে নির্দেশনা অনুযায়ী ১লা ডিসেম্বর অভিযান শুরু হয়েছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাদের অধিকাংশকেই কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এতে আগের চেয়ে বেশি বন্দি আসছে কারাগারে। গত ১০ দিনে বেশি বন্দি এসেছে। জেলা শহরের চাইতে বিভাগীয় ও ঢাকা কারাগারে বন্দিদের সংখ্যা বেশি।

সূত্র জানায়, দেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৬২৬ জন। তার মধ্যে পুরুষ বন্দি ৩৯ হাজার ৬৯৭ এবং মহিলা বন্দি ১ হাজার ৯২৯ জন। বিদেশি বন্দি আছে ৪৭২, শিশু ৩৪১, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১২৫ এবং জঙ্গি রয়েছে ৫৭৪ জন। দিন দিন বন্দির সংখ্যা বাড়ছে। খুলনা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৬৭৮ জনের বিপরীতে ১ হাজার ২১৪, সিলেট কারাগারের দুই হাজারের বিপরীতে ২ হাজার ৬০০ জন বন্দি আছে।

সূত্র জানায়, আদালত থেকে জামিনের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে এই বন্দি বাড়ছে। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন্নস্থানে দায়ের হওয়া মামলার আসামির সংখ্যা বেড়েছে। আসামির সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি গ্রেপ্তার পরোয়ানা তামিল হচ্ছে বেশি। এ কারণে নতুন বন্দির সংখ্যা বেড়েছে।

কারা অধিদপ্তর জানায়, কারাগারে অধিক বন্দি হওয়ার কারণে লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। যেখানে একজন বন্দি ঘুমানোর কথা সেখানে দুই জনকে ঘুমাতে দেয়া হচ্ছে। শৌচাগার ব্যবহারে বন্দিদের লাইন হচ্ছে। গোসলে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেক বন্দি রাতে ভালোমতো ঘুমাতে না পারার কারণে দিনে ঘুমাচ্ছেন।

সূত্রঃ মানবজমিন

Advertisements