গুলশান-বনানীর অভিজাত হোটেলে সুন্দরী রমণীদের আনাগোনা বন্ধ
Advertisements

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি, বিতর্কিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ গ্রেফতারের পর রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান ও বনানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দাদের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। ফলে এখানকার তারকা হোটেলগুলোতে কমেছে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের সঙ্গী হওয়া সুন্দরী তরুণীদের আনাগোনা।

এছাড়া পার্টি হাউস ও অসামাজিক কাজের ‘সেফ প্লেস’ হিসাবে পরিচিত কয়েকটি বাসার বাসিন্দারা গা-ঢাকা দিয়েছে। বন্ধ হয়েছে অনৈতিক কাজে জড়িত অধিকাংশ সিসা লাউঞ্জ, ম্যাসাজ ও বিউটি পার্লার।

গত ১ আগস্ট দিবাগত রাতে গুলশান থেকে গ্রেফতার হয় মডেল পিয়াসা ও মোহাম্মদপুর থেকে মৌ। এরপর ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় বনানীর বাসা থেকে গ্রেফতার হন অভিনেত্রী পরীমনি। গ্রেফতার হন তাদের কয়েক ঘনিষ্ঠ সহযোগীও।

তাদের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরচালান, অবৈধ অস্ত্রের কারবার, ব্ল্যাকমেইলিং, মাদক কারবার, বিদেশে অর্থ পাচার, শত শত কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি গিয়ে গাড়ি আমদানিসহ নানা অভিযোগ আসতে থাকে। তখন থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে তথাকথিত মডেল ও রুপালি জগতের অনেকের মধ্যেই। যারা এক সময়ে পিয়াসা-মৌ ও পরীমনি চক্রের ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। আতঙ্কে বন্ধ করে দেয় তাদের পরিচালিত অনেক প্রতিষ্ঠান।
এদিকে পিয়াসাকে গ্রেফতারের পর অনৈতিক কাজের মাধ্যমে ‘ব্ল্যাকমেইলিং’ এ জড়িতদের অনেক ‘সেফ প্লেস’ এখন ফাঁকা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘সেফ প্লেস’ এর নামে এসব বাসায় ধনীর দুলালদের ঘনিষ্ঠ হতো চক্রের তরুণীরা। অনেক নামি-দামি ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরাও সেখানে যেত। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোপন ক্যামেরা দিয়ে তাদের বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করা হতো। যেগুলো দিয়ে চক্রটি ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিত মোটা অংকের অর্থ।

এছাড়াও অনেক সময় বিভিন্ন বাসাতেও হতো পার্টি। যেখানে মাত্রাতিরিক্ত নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে অনেকেই অচেতন হয়ে পড়ত। তাদেরকেও করা হতো ব্ল্যাকমেইল। কিছু কিছু পার্টিতে আবার ‘পার্টি গাল’রা অতিথিদের সঙ্গ দিয়ে সেগুলোর ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ করত। যা দিয়ে পরবর্তীতে ফাঁদে ফেলা হতো।

গুলশান-বনানী এলাকায় এমন অন্তত ২৩টি বাসা রয়েছে। অভিনেত্রী মডেল কেলেঙ্কারির পর এসবের অধিকাংশই এখন বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

বনানীর একটি সিসা লাউঞ্জের নিরাপত্তায় নিয়োজিতরা জানান, একটি সিসা লাউঞ্জের মালিক ব্লক এইচের ৭নং সড়কের একটি ভবনের দোতলার বাসায় নিয়মিত পার্টির আয়োজন করত। যেখানে নায়ক-নায়িকাদেরও যাতায়াত ছিল। অভিনেত্রী মডেলদের গ্রেফতারের পর সেটিও বন্ধ হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, এরা কেবল মডেলদের সঙ্গে গল্প করে বা আড্ডা দেয় এমন নয়, বড় বড় অপরাধেও সম্পৃক্ত হয়েছেন তারা। পিয়াসা চক্র গ্রেফতারের পর আলোচনার বাইরে থাকতেই অপকর্মের গডফাদাররা জনসমাগম এড়িয়ে চলছেন।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন যুগান্তরকে বলেন, কারও বাসায় বার বানানো, অবৈধভাবে মাদক গ্রহণ ও বেচাবিক্রির বিরুদ্ধে সবসময় আমাদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। সম্প্রতি অভিনেত্রী পরীমনিকে গ্রেফতার যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। সিসা লাউঞ্জের আড়ালে কেউ অবৈধ কর্মকাণ্ড ও মাদক কারবারে জড়িত হলে তাদেরকেও ছাড়া দেওয়া হবে না।

সূত্রঃ যুগান্তর

Advertisements