- সেনা বিদ্রোহের পর কেইতার পদত্যাগ - সত্য ও নিরপেক্ষ সংবাদ
Advertisements

বিদ্রোহীদের হাতে প্রেসিডেন্ট আটক হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর পদত্যাগের খবর আসল , তবে কেইতার অনুপস্থিতিতে সরকার কে পরিচালনা করতেছে তা স্পষ্ট নয়।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে দুর্নীতি ও নিরাপত্তার অবনতির বিরুদ্ধে কয়েক মাসের গণ-বিক্ষোভের পর বিদ্রোহী সৈন্যরা প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতাকে মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর পদত্যাগ করেন।

টেলিভিশন ভাষণে তিনি সরকার ও পার্লামেন্ট বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করেছেন।

”যদি আজ আমাদের সেনাবাহিনীর একটি নির্দিষ্ট অংশ নিজেদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সমাপ্তি টানতে চায়, আমার সামনে কি সত্যিই আর কোন বিকল্প আছে?” তিনি বলেন।

”আমাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কোনরকম রক্তপাত হোক, সেটা আমি চাই না,” তিনি বলেছেন।

এই বিদ্রোহের কে নেতৃত্ব দিচ্ছিল , কাইতার অনুপস্থিতে কে শাসন করবে বা বিদ্রোহীরা কী চেয়েছিল তা তত্ক্ষণাৎ জানা যায়নি ।

মালির সৈন্যদের মধ্যে বেতন-ভাতা নিয়ে অসন্তোষ এবং জিহাদিদের সঙ্গে অব্যাহত লড়াই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। সেই সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্টের ওপরেও অনেকে সন্তুষ্ট নন।

২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো বিজয়ী হন মি. কেইতা, কিন্তু দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় তার ওপর অনেকের ক্ষোভ তৈরি হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বেশ কয়েকবার বড় ধরণের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির রক্ষণশীল মুসলমান ইমাম মাহমুদ ডিকো নেতৃত্বাধীন নতুন একটি জোট দেশে সংস্কারের দাবি তুলেছে। তাকে মি. কেইতা যৌথ সরকার গঠন করা সহ নানা প্রস্তাব দিলেও তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বিদ্রোহ সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

মালির কাটি সামরিক ঘাটির ডেপুটি কমান্ডার কর্নেল মারিক ডিয়াউ এবং জেনারেল সাদিও কামারা এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বামাকো থেকে বিবিসি আফ্রিকান সার্ভিসের সাংবাদিক আবদাউল বা।

বামাকো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের এই সামরিক ঘাটির দখল নেওয়ার পর বিদ্রোহী সৈনিকরা রাজধানীতে চলে আসে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী কেইতার পদত্যাগের দাবিতে জমায়েত হওয়া লোকজন তাদের স্বাগত জানায়।

মঙ্গলবার দুপুরের পর তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে থাকা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী- দুইজনকেই গ্রেপ্তার করে।

প্রেসিডেন্টের ছেলে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীকেও আটক করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

তবে এই বিদ্রোহে দেশটির কতো সৈনিক অংশ নিয়েছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

২০১২ সালেও কাটি সামরিক ঘাটিতে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছিল যখন জিহাদিদের ঠেকাতে সিনিয়র কমান্ডারদের ব্যর্থতা আর উত্তর মালিতে তুয়ারেগ বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল সৈনিকরা।

এই ঘটনায় কী প্রতিক্রিয়া হয়েছে?

বিদ্রোহের ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পরে জাতিসংঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন আটককৃতদের ছেড়ে দেয়ার আহবান জানিয়েছে।

১৫টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ইকোনমিক কম্যুনিটি অফ ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস ঘোষণা করেছে যে, তারা মালির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেবে, সব ধরণের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করবে এবং জোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে আপাতত মালি বাইরে থাকবে।

মালির সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার আলোচনায় বসবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

মালির ঔপনিবেশিক সাবেক শাসক ফ্রান্স প্রেসিডেন্টকে আটকের নিন্দা জানিয়েছে। সৈনিকদের ব্যারাকে ফিরে যেতে আহবান জানিয়েছে ফ্রান্স।

সূত্রঃ আল-জাজিরা , বিবিসি

 

 

Advertisements