সীমান্তে একের পর এক হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক, আর ভারতের জন্য লজ্জাজনক বলে ফের মন্তব্য করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে ভারত যদি তাদের বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারে, সেটিও লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেন তিনি । সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী বলেন, এটি খুব দুঃখজনক। কিছু দিন পর পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে লোক মারা যায়। যদিও সর্বোচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আমরা একটি লাশও সীমান্তে দেখতে চাই না। কিন্তু তারপরেও দুর্ঘটনা ঘটছে।
মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক এবং ভারতের জন্য লজ্জাজনক। কারণ, তারা যদি তাদের বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে না রাখে, ভারতের মতো একটি শক্তিশালী, উন্নত, পরিপক্ব গণতন্ত্র যদি তাদের বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে না রাখতে না পারে, তবে সেটিও লজ্জাজনক। শনিবার দিবাগত রাতে চুয়াডাঙ্গার বলদিয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে মুনতাজ হোসেন ও সাতক্ষীরার খৈতলা সীমান্তে মো. আবু হাসান নিহত হন।
মিয়ানমারে বিনিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়: ক্রমাগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন সত্ত্বেও মিয়ানমারে বৃটেনসহ পশ্চিমা দুনিয়ার বিনিয়োগে ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন- এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সোমবার দুপুরে বৃটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোন আলাপে তিনি এ উষ্মা প্রকাশ করেন।
আলাপ শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, কিছুক্ষণ আগে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়েছে। সেখানে আমি রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ তুলেছি। আমি বলেছি- বিভিন্ন তথ্যমতে জানা যাচ্ছে যে, গত পাঁচ বছরে মিয়ানমারে আপনারা যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছেন। যদিও আপনারা কোনও কোনও জেনারেলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, কিন্তু মিয়ানমারে বিনিয়োগ অনেকগুণ বেড়েছে। যুক্তরাজ্য হচ্ছে মানবাধিকারের নেতা। কিন্তু তারপরেও মিয়ানমারে তারা বিনিয়োগ করছে এবং এটি গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশে কোনো আরসা নেই দাবি করে মন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, এ ধরনের কোনো গ্রুপকে সরকার আশ্রয় দেয় না।
মিয়ানমার ইস্যুতে আজকেও প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কিন্তু পরিতাপের বিষয় বৃটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়িয়ে চলেছে। রাখাইনে সংঘাত চলছে এবং এসময় বাংলাদেশে গোলাগুলি এসে পড়ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি বন্ধে আমরা চীনের সহযোগিতা চেয়েছি। তারা বলেছে তারা জানাবে এবং আমাদের বিশ্বাস তারা জানিয়েছে। তবে অনেক কিছু মিয়ানমার সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেজন্য জানালেই যে তারা সবকিছু ঠিক করে ফেলতে পারবে, বিষয়টি সেরকম নয়। বাংলাদেশে বিরোধী এবং ভিন্নমত দমনে সরকারের পদক্ষেপে আন্তর্জতিক সম্প্রদায়ের যে উদ্বেগ রয়েছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, সরকার কারো মানবাধিকার লঙ্ঘন হোক সেটা চায় না। কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও করে যদি কেউ জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তবে, সরকার ব্যবস্থা নেবে।