নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে
Advertisements

আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার যে সিদ্ধান্ত দলটির রয়েছে, তা সিটি নির্বাচনেও বহাল থাকছে। দলের এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে, কোনো ‘কৌশলের আশ্রয়’ না নিয়েই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেটের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

তফসিল অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ আজ ২৭ এপ্রিল, বাছাই ৩০ এপ্রিল এবং ৮ মের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে এবং ২৫ মের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৩ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে, বাছাই ২৫ মে এবং ১ জুনের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ সিটিতে নির্বাচনের বিষয়ে বৈঠকে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। নেতারা এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করেছেন। কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে অতীতে দল থেকে বহিষ্কারের মতো যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, ঠিক তেমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে মতামত দেয়া হয়েছে।

সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে গণমাধ্যমে বিএনপির বেশ কিছু নেতার নাম এসেছে। সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। গণমাধ্যমে খবর এলেও দলের নীতিনির্ধারকদের কাছে কেউ প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেনি। খুলনায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বরিশালে মজিবুর রহমান সারোয়ার ও রাজশাহীতে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আগের নির্বাচনে প্রার্থী হলেও এবার তারা কেউ প্রার্থী হবেন না বলে স্থায়ী কমিটির নেতাদের বিশ্বাস। গাজীপুরেও প্রার্থী হওয়ার জন্য কেউ দলের সাথে কোনো ধরনের আলোচনা করেননি। সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীও দলের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকবেন বলে নীতি-নির্ধারকরা মনে করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, কেউ মেয়র কিংবা কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চাইলে তাকে দল থেকে বোঝানো হবে। বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনে আছে। আন্দোলনের মাঝপথে নির্বাচনে প্রার্থী হলে দলের কী ক্ষতি হতে পারে, এর আগের নির্বাচনগুলোতে প্রার্থী হয়ে কে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সে বিষয়গুলো তুলে ধরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিরুৎসাহিত করা হবে। তারপরও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে, প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের পদধারী কোনো নেতা ইন্ধন দিলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির নেতারা সবাই একবাক্যে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। তবে কাউকে দল থেকে বহিষ্কার করার আগে তিনি যাতে প্রার্থী না হন সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তাদের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন।
আন্দোলনমুখী দল হিসেবে বাধ্য না হলে কোনো নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করতে চায় না বিএনপি। বিএনপি নীতিনির্ধারকরা বলেন, প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে পদধারী যেসব নেতার নাম গণমাধ্যমে আসছে তা একধরনের সরকারি অপপ্রচার। কারণ, যাদের নাম আসছে তারা কেউ দলের কাছে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। তারা মনে করেন, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার উকিল আবদুস সাত্তারের মতো বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কাউকে কাউকে প্রার্থী করতে চাইবে সরকার। কিন্তু তাতে সরকার সফল হবে না বলে মনে করেন নেতারা।

পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর স্থানীয় সরকারের যে কয়েকটি নির্বাচন হয়েছিল কোনোটিতেই বিএনপি অংশ নেয়নি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। এর আগে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।

Advertisements