
বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করেছে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক কারবার, তদবির বাণিজ্য ও পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলছে।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত নেতাদের বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, সম্পত্তি ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাব জব্দের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার অভিযানও শুরু হয়েছে, এবং ইতোমধ্যে কয়েকজনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে, সিআইডি মানি লন্ডারিং বিধিমালা ২০১৯ অনুযায়ী ২৪টি অপরাধে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আইন অনুযায়ী, অনুসন্ধানকালীন আদালতের আদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা যায়। এ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সাজা আট বছর থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।
সিআইডির সদ্য সাবেক প্রধান গাজী জসিম (বর্তমানে শিল্পাঞ্চল পুলিশের প্রধান) জানান, আইন ও বিধি অনুযায়ী অপরাধ তদন্তে ও অপরাধী পাকড়াও করতে কাজ করছে সিআইডি। তবে, দেশব্যাপী এই বিশাল কর্মযজ্ঞের ক্ষেত্রে লোকবল, ইকুইপমেন্ট ও অর্থের স্বল্পতা, যানবাহনের অপ্রতুলতা এবং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের অভাবসহ কিছু প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
এদিকে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করছেন। নেতাকর্মীদের সক্রিয় করে মাঠে নামানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন পলাতক নেতারা। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মিটিং করে দেশে থাকা বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, সরকারবিরোধী মিছিল করানোর জন্য অর্থায়নকারীদের খোঁজে তদন্ত চলছে। এ ক্ষেত্রে রহস্যময় এক নারীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তথ্য পাওয়া গেছে।
সিআইডির এই তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে, নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।