সংশোধিত ওয়াকফ বিল
Advertisements

সংশোধিত মুসলিম ওয়াকফ আইন নিয়ে গোটা ভারতজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন এই আইনের বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমেছে মুসলিম সম্প্রদায় ও একাধিক রাজনৈতিক দল। বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মন্তব্য ঘিরে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেন, “দাঙ্গাকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার একমাত্র উপায় বলপ্রয়োগ। পশ্চিমবঙ্গ পুড়ছে, অথচ সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীরব। তিনি দাঙ্গাকারীদের ‘শান্তিদূত’ বলছেন। যারা লাঠির ভাষা বোঝে, তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন নেই।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক মন্তব্যকেও ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। হরিয়ানায় এক অনুষ্ঠানে মোদি বলেন, “ওয়াকফের নামে দেশে লাখো হেক্টর জমি রয়েছে। এই সম্পদ সততার সঙ্গে ব্যবহৃত হলে, অনেক মুসলিম যুবককে সাইকেলের পাংচার মেরামত করে জীবন চালাতে হতো না।”

এআইএমআইএম প্রধান ও হায়দ্রাবাদ এমপি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এক্স-এ (পূর্বের টুইটার) মোদির বিরুদ্ধে পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, “আরএসএস যদি তাদের সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করত, তাহলে মোদিকে ছোটবেলায় চা বিক্রি করতে হতো না।” তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এমন অবমাননাকর মন্তব্য শোভনীয় নয়।”

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামি সংগঠন থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই আইনকে মুসলিম স্বার্থবিরোধী বলে অভিযোগ তুলেছে। ইতোমধ্যেই সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি, বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং আরজেডি—সহ একাধিক ব্যক্তি ও সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে।

বুধবার এসব মামলার শুনানিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ওয়াকফ বোর্ড ও কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কমিটির সব সদস্য মুসলিম হতে হবে। তবে যদি কোনও পদাধিকারবলে কেউ সদস্য হন, তা হলে ব্যতিক্রম হতে পারে। আদালত আরও জানতে চেয়েছে, হিন্দুদের ধর্মীয় ট্রাস্টে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ আছে কি না।

শীর্ষ আদালত আরও জানিয়ে দেয়, যেসব সম্পত্তিকে আদালত ওয়াকফ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সেগুলোর মালিকানা আপাতত পরিবর্তন করা যাবে না। আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisements