শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সহজ জয় বাংলাদেশের
Advertisements

প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সহজ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২৫৬ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় টাইগাররা।

নেতা কেমন হতে হয়, তারই যেন জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ‘ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’ বলতে যা বুঝায় তার পুরোটাই ছিলেন আজ বাংলাদেশ অধিনায়ক। তীর হারিয়ে তরী যখন উত্তাল সাগরে দুল্যমান, দক্ষ নাবিকের মতোই তাকে বন্দরে পৌঁছালেন তিনি।

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস উপহার দিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দলকে জয় এনে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার ১২২ রানের ইনিংসে ভর করে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার দেয়া ২৫৫ রানের লক্ষ্য ৪৪.৪ ওভারেই পাড়ি দেয় বাংলাদেশ।

৬ উইকেটের জয় বিশাল হলেও শুরুটা ছিল ভুলে যাবার মতো। ২৫৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই হারায় লিটন দাসের উইকেট। মাদুশঙ্কার বলে গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়ে ফেরেন লিটন। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও করেন হতাশ। মোটে ৩ রান আসে তার ব্যাটে।

বিপিএলের ছন্দটা প্রথম ওয়ানডেতে টানতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়ও (৩)। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলকে বিপদে রেখে ফেরেন তিনিও। ৫.১ ওভারে মাত্র ২৩ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তখন বেশ চাপে। সেখান থেকেই হাল ধরেন শান্ত- মাহমুদউল্লাহ।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে গড়েন ৬৩ বলে ৬৯ রানের জুটি। যেই জুটিতে ভর করে এখনো টিকে থাকে টাইগারদের সম্ভাবনা। জুটি ভেঙে মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ৩৭ বলে সমান ৩৭ রানে। তবে মুশফিকুর রহিমকে সাথে নিয়ে লড়াই জারি রাখেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত এই জুটিতেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

দু’জনে মিলে গড়েন ১৮০ বলে ১৬৫* রানের রেকর্ড জুটি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই জুটি গড়ার পথে শান্ত ১০৮ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ক্যারিয়ার সেরা ১২৯ বলে ১২২ রানে। মুশফিক করেন ৮৪ বলে ৭৩* রান।

এর আগে শ্রীলঙ্কাকে বেশিদূর উড়তে দেননি সাকিব-তাসকিনরা। হাতের নাগালেই রাখলেন লক্ষ্যটা। ৪৮.৫ ওভারে ২৫৫ রানেই গুঁটিয়ে দেয় লঙ্কানদের।

যদিও টসে জিতে চট্টগ্রামে আত্মবিশ্বাসী শুরু ছিল শ্রীলঙ্কার। উদ্বোধনী জুটিতে একপ্রকার শাসন করে টাইগার বোলারদের। প্রথম ৯ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ৬৮ রান। অবশেষে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এসে এই জুটি ভাঙেন তানজিম সাকিব। দলকে এনে দেন প্রথম উপলক্ষ।

৯.৫ ওভারে ৩৩ বলে ৩৩ রান করে মুশফিককে ক্যাচ দেন আভিষ্কা। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ টেকেননি নিশানকাও। পরের ওভারে এসে সাকিব ফেরান তাকেও, আউট হবার আগে ২৮ বলে ৩৬ রান করেন নিশানকা। তিনে নামা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে থিতু হতে দেননি সাকিব।

১৪তম ওভারে এসে তাকেও তুলে নেন এই পেসার। ৫ বলে ৩ রান আসে তার ব্যাটে। ১৪ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ৮৮। এরপর আরো একটা উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ২৬ ওভার পর্যন্ত। দলীয় ১২৮ রানে মেহেদী মিরাজ ফেরান ৩৭ বলে ১৮ রান করা আসালাঙ্কাকে।

এরপর মাঠে এসে লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসের সাথে পাল্লা দিয়ে রান কর‍তে শুরু করেন জেনিথ লিয়ানগে। দু’জনের জুটিতে আসে ৭১ বলে ৬৯ রান। ৭৫ বলে ৫৯ করা মেন্ডিসকে ফেরান তাসকিন। পরের দুই ওভারে এসে হাসারাঙ্গা (১৩) আর থিকসানাকেও (১) ফেরান তাসকিন।

৪২.৪ ওভারে ২২৫ রানে ৭ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। সাকিব-তাসকিনের পর এবার দৃশ্যপটে আসেন শরিফুল। লেজ ছাটাইয়ের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন তিনি। যেখানে ছিল ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৭ রান করা লিয়ানগের উইকেটও। শেষ ৫৬ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

Advertisements